সিলেটে ভোট রাজনীতির মাঠে একতরফা গরম দেখিয়েছেন মহাজোটের প্রার্থীরা। সেই গরমে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও পাত্তা দেননি প্রার্থীরা। শুধু পুলিশ নির্ভরতায় মাঠে-ময়দানে নিজের বলয় নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন অপ্রত্যাশিত অহঙ্কারি মেজাজে। প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও কর্মী সমর্থককে রেখেছেন দৌড়ের উপর। সেই দৌড়ে বিষিয়ে উঠছে পারস্পরিক সামাজিক সর্ম্পক। রাজনীতিক সর্ম্পকের উর্ধ্বে আবহমান এ সর্ম্পকে ফাটল ধরেছে রাজনীতিক কূটকৌশলে। এতে করে দলের কর্মী সমর্থকরা পুলিশি ধরপাকড়ে তোপের মুখে সামাজিক সর্ম্পকে টানাপোড়নে পড়েছেন। চরম বিব্রতবোধ নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন আ.লী কর্মী-সমর্থকরা। ধরপাকড়ে তাদের কোন তথ্য বা সহযোগীতা না থাকলেও দোষের দোষী হচ্ছেন তারা।
মূলত নৌকার প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে দূরে বসেই ছক করেই কেন্দ্র ভিত্তিক এ ধরপাকড়ে বদনামের ভাগিদার স্থানীয় নৌকার কর্মী সমর্থকরা। তারা উপায়হীন হয়ে পড়ছেন স্থানীয়ভাবে। কেউ বাসা-বাড়িতে গ্রেফতার বা হয়রানিতে পড়লেই ফোন করে সহযোগিতা চাচ্ছেন স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীদের। সামাজিক সর্ম্পকে পারস্পরিক সহযোগিতা চিরন্তন। কিন্তু এহেন পরিস্থিতিতে কেউ কারো পাশে দাঁড়াতে পাছেন না। সামাজিক সর্ম্পকহীন শহরে জীবনের চিত্রের বাস্তবতায় তোলপাড় চলছে গ্রামীণ জীবনে। আ.লীগ নেতাকর্মীরা গ্রেফতার বা হয়রানির সাথে তাদের সর্ম্পক নেই বলেও দায় এড়াতে পারছেন না। সবার সন্দেহের চোখ এখন তাদের উপর। অথচ নির্বাচনী এলাকা মহাজোট প্রার্থীদের আদরে কদরে নেই দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী। তাদের ছাড়াই নির্বাচন বিজয়ের জাল বুনছেন তাদের দলের প্রার্থীরাই। সাধারণ মানুষ তৃণমূলে সরকার দলের নেতাকর্মীদের এগিয়ে চলতে দেখা যাচ্ছে। সামনে পড়লে কোন মতে কুশল বিনিময় করে, দ্রুত সরে যাচ্ছে। বিশ্বাস করতে পারছে না তাদের। মনে করছে, পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেয়া হবে তাদের। নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে গ্রামীণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন। এর পেছনে রয়েছে সরকার দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের হাত। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শাসক দলের কর্মী-সমর্থক হিসেবে মাঠে ময়দানে পরিচয়-পরিচিতি নিয়ে বেড়ালেও বর্তমান মহাজোট প্রার্থীদের সু-নজরে নেই দলের নেতাকর্মীরা। গায়ে পড়ে কেউ নির্বাচনে সক্রিয় রয়েছেন নৌকার ভালবাসায়। উপর পর্যায়ের কোন নেতা যোগাযোগ করলে প্রার্থীর উপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন ইচ্ছেমতো। নিজদের বিব্রত অবস্থ্ওা তুলে ধরছেন। জানাচ্ছেন এলাকার অমুক নিরীহ মানুষকে ধরে নেয়া হয়েছে, অথচ জানিই না আমরা। কেন ধরা হলো সেই দায় আমাদের ঘাড়ে পড়ছে। মানুষ নাখোশ হয়ে, আমাদের নিয়ে খারাপ কথাবর্তা বলছে। ইমেজ সঙ্কটে বেহাল অবস্থায় আমারা। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিপাকে খোদ সরকার দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। না হতে পারলেন প্রিয়জন বা প্রয়োজন নৌকা মাঝিদের। বরং শক্র হয়ে গেলেন স্থানীয় প্রতিপক্ষ রাজনীতক কর্মী-সমর্থক ও সমাজের সাধারণ মানুষের। সেকারণে ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। এহেন অবস্থায় নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছেন ভোটের আগেই আ.লীগের কর্মী-সমর্থকরা। স্থানীয়ভাবে খবর নিয়ে দেখা গেছে, সুযোগ পেলেই শাসক দলের নেতাকর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে বিরোধী নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারা। গণরোষের আশঙ্কায় শঙ্কিতভাব দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় নেতাকর্মীদের। এমনকি অনেকে বলছেন, প্রার্থীর একতরফা গরম ভাবে গণেশ উল্টে দিতে পারে নীরব ভোটাররা। সেই সাথে তো রয়েছে প্রতিপক্ষ দল সমর্থিত ভোটার। আত্মগোপন থেকে বের হয়ে ভোট কেন্দ্রে তারা উপস্থিত হবেই, ভোট আর প্রতিশোধের দহন নিয়ে। এতে করে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় তা নিয়ে চিন্তিত আ.লীগের চিন্থিত নেতাকর্মীরা। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভোট কেন্দ্রে কার্যত একাই থাকবে আ.লীগ। মনে বল থাকবে প্রশাসন তাদের পাশে রয়েছে। নিজে না লড়ে প্রশাসন দিয়ে চাপে রাখতে চাইবে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের। কিন্তু এতে করে বিগড়ে যেতে পারে পরিবেশ-পরিস্থিতি। কারণ সিলেটের প্রতিটি কেন্দ্রেই বিএনপির সাথে থাকবে জামায়াতসহ বাকী শরিক দলের কর্মী সমর্থকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন