চলনবিলে বর্তমানে প্রায় ৫ শতাধিক মৌচাষী বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন ও সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলনবিলের বিভিন্ন স্থানে মৌমাছির বাক্সসহ অবস্থান নিয়েছেন। চলতি বছর এ এলাকা থেকে কমপক্ষে ২০ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করছেন তারা ।
জানা গেছে, চলনবিলের বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলায় গত ৬-৭ বছর ধরে রবি মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে কোটি কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বছরও বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌচাষী মধু সংগ্রহের জন্য চলনবিলের সরিষার জমিতে হাজার হাজার মৌবাক্স বসিয়েছেন। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চলনবিলের ৯ উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে চলনবিলে সরিষার ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। আর সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য মাসখানেক আগে থেকেই মৌচাষীরা বিলের সুবিধাজনক স্থানে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন। বর্তমানে এ বিল যেন লাখ লাখ মৌমাছির মৌ মৌ গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন অন্যদিকে সরিষার ফলনও বাড়ছে।
মাগুড়া থেকে আসা মৌচাষী আব্দুস সালাম জানান, তার মোট ৯৫ টি মৌবাক্স রয়েছে, যা থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে প্রায় সাড়ে ৪ মণ মধু সংগ্রহ করতে পারেন। চলনবিলের খাঁটি মধু সংগ্রহের জন্য প্রাণ, স্কয়ার, এপিসহ বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানীর প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছেন। স্কয়ার কোম্পানীর প্রতিনিধি মাহফুজ জামাল জানান, চলনবিলের মধুর গুণগত মান অত্যন্ত ভালো। এসব মধু সংগ্রহ করে প্রতি কেজি ২৫০-৩০০ টাকা দরে বাজারজাত করা যায় বলে তিনি জানান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন জানান, যেসব সরিষার জমি থেকে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে, সেসব জমির সরিষার ফুলে সঠিকভাবে পরাগায়ন ঘটে। ফলে সে জমির সরিষার ফলন ২৫-৩০ গুণ বেড়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন