বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসনের প্রার্থী কারাবন্দি মনিরুল হক চৌধুরীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গতকাল তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আজ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার ও মনিরুল হক চৌধুরীর পারিবারিক সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লা কারাগারে ছিলেন মনিরুল হক। কুমিল্লা কারাগারের ডেপুটি জেলার কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, মনিরুল হক চৌধুরী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী দুপুরে কুমিল্লা কারাগার থেকে তাকে পুলিশের পাহারায় কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই কারাগার থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
মনিরুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অসুস্থ বিএনপি নেতা মনিরুলকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মনিরুল হক চৌধুরীর মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, আমার বাবা বৃদ্ধ মানুষ। তার ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেননি। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমরা আজ কী দেখছি। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একের পর এক মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় তিনি গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে কারাগারে বন্দি আছেন। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় তিনি মারাও যেতে পারেন। এর বিচার আমরা কার কাছে চাইব, জবাব কে দেবে। আমরা অবিলম্বে তার মুক্তি চাই।
মনিরুল হক চৌধুরীর আইনজীবী কাজী নাজমুস সা’দাত বলেন, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রামে দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমা হামলায় বাসের ৮ যাত্রী নিহতের ঘটনায় দুটি মামলায় মনিরুল হক চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বতীকালীন জামিনে ছিলেন। কুমিল্লার আদালতে বিভিন্ন তারিখে তিনি হাজির ছিলেন।
গত বছরের ২৪ অক্টোবর জেলা জজ আদালতের বিচারক তার জামিন বাতিল করেন। পরে দুটি মামলায় গত বছরের ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে তার জামিন আদেশ হয়। এরপর জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর কারণে তিনি জেলহাজতে আছেন। এসব মামলার এজাহারে তার নাম নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন