বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঝুঁকিতে তিস্তা ব্যারাজ

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ভারী যানবাহন

নীলফামারী সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিস্তা ব্যারেজের উপর দিয়ে চলছে ভারী যানবাহন। এতে করে ব্যারেজের মূল কপাট গুলোর অপারেটিং সিস্টেমে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যা। এ ছাড়া ভারী যানবাহন চলাচল ঠেকাতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের প্রবেশমুখে স্থাপিত লোহার রড ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। প্রবেশ মুখের লোডার ব্যারিকেড রড ভেঙ্গে দিয়ে দিনে ও রাতে চলছে পাথর বোঝাই ৪০ মেট্রিক টন ওজনের ট্রাক। অথচ সেখানে রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি ও আনসার ক্যাম্প।

নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সীমানা ডালিয়া ও দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ। চালু হবার পর রাজস্ব আদায়ে তিস্তা ব্যারাজ দিয়ে যানবাহন পারাপারে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০১ সালে ব্যারেজের উপর দিয়ে ২০ টনের নিচে সব যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর সরকার রাজস্ব আয় করতো কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু টোল আদায়ের ঠিকাদার কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে আতাত করে টাকার বিনিময়ে ৩০ থাকে ৩৫ টনের বেশি ওজনের ভারী যানবাহন চলাচলের সুবিধা করে দেয়। এতে ব্যারাজে দেখা দেয় ফাটল ও ৪৪টি মূল কপাট গুলোতে অপারেটিং এ দেখা দেয় সমস্যা।

তিস্তা ব্যারাজকে রক্ষার্থে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর হতে ব্যারেজের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে টোল আদায় বন্ধ করা হয়। ব্যারেজের উভয় প্রান্তের গেটে মূল সড়কে রিক্সা ভ্যান, কার, মাইক্রোবাস পারাপারের সুবিধায় ৭ ফিট ৮ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে লোহার পাইপ বসিয়ে রাস্তা সংকীর্ণ করা হয়। যাতে ট্রাক ও বাস চলাচল করতে না পারে। ফলে বুড়িমারী থেকে বিভিন্ন ভারী যানবাহন পাটগ্রাম হাতীবান্ধা লালমনিরহাট হয়ে তিস্তা সেতু দিয়ে চলাচল করে আসছিল। দীর্ঘদিন ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পর হঠাৎ করে গত এক মাস ধরে ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ তিস্তা ব্যারাজের প্রবেশের দ্বারের উভয় প্রান্তের লোহার পাইপ ভেঙে পুনরায় চলাচল সচল হয় ভারী যানবাহন। এ জন্য সরকারি এ নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের যোগসাজশে পুনরায় ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করেছে ব্যারাজের উপর দিয়ে।

কয়েকজন ট্রাক চালক জানায় টাকা ছাড়া ব্যারাজে পাথর বোঝাই গাড়ি তোলা সম্ভব নয়। ট্রাকপ্রতি এক হাজার করে টাকা দিলেই বাধা নেই। তিস্তা ব্যারাজ হয়ে চলাচল করলে তিস্তাসড়ক সেতুর টোল ও রাস্তার দুরত্ব কমে অতিরিক্ত জ্বালানি দুটোই বেঁচে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ব্যারেজের স্থায়িত্ব যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে, তেমনি ব্যারেজের সংযোগ সড়ক ফ্লাড ফিউজ সড়কেও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি করেছে।
তিস্তা ব্যারাজের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা আনসার ক্যা¤েপর ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ আবু সাঈদ বলেন, লোহার পাইপের মাঝ দিয়ে যাওয়ার মত ছোট ছোট ট্রাক চলাচল করে। তবে লোহার পাইপ কারা কিভাবে ভেঙ্গেছে তা তিনি জানেন না।

অপরদিকে তিস্তা ব্যারাজে নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফওয়াজুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদন অনুযায়ী ছোট ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করে। তবে পাথরের ট্রাক চলাচলের কোনো সুযোগ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, সরকারীভাবে ভারী যাহবাহন চলাচল বন্ধ রাখা রয়েছে। রাতের আধাঁরে একটি চক্র ট্রাক পরিবহনের সহায়তার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন