বিশ্ব সৃষ্টির অনিদ্যে সুদের রুপ রহস্যের নেপথ্যে যা রয়েছে তা’ হলোÑ খোদায়ী নূরের প্রেমরুপ শিল্পায়ন। জ্ঞানের গভীরে সুদেরের নিবিড়ে নূরে মোহাম্মদীর অপরুপ আয়োজন, ধূলির ধরণী থেকে আরশে আজমের মহাসফরে এ নূরের ভীষন প্রয়োজন। স্রষ্টা সৃষ্টির প্রেমের সেতুবন্ধন সূচিত হয় প্রিয় রাসূলের নূরে পাকের মায়াবী সংযোগে, তৌহিদ রেসালতের মর্মবোধ লুকানো এ নূরের অনুরাগে। ইমাম কুস্তালানী রহ. রচিত ‘আল্ মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ’-তে উল্লেখ আছেÑ হযরত জাবের রা. প্রিয় রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট সর্বপ্রথম সৃষ্ট বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে নবীজি ইরশাদ করেন, “হে জাবের! নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা সকল বস্তুর পূর্বে তোমার নবীর নূরকে আল্লাহর নূর হতে সৃষ্টি করেছেন।” এ নূরের আকর্ষণে আকর্ষিত হয়েছ সৃষ্টির সর্বত্র, এ নূরের পরশে খোদায়ী প্রেমের জয়গানে হয় ক্বলব পবিত্র।
নবীজির আপাদমস্তক ছিল নূরে জাহেরার অলঙ্কারে অলঙ্ক
ত আর অভ্যন্তরভাগ ছিল নূরে বাতেনায় সমাদৃত। সাহাবায়ে কেরাম রা. নবীজিকে কাছে পেয়ে দুই ধরণের নূরের সুধাই আস্বাদন করেছেন। নবীজির সেই স্বর্ণালী যুগের পর নূরে জাহেরার অমৃত সুধার আস্বাদন পাবার সুযোগ না হলেও রয়েছে নূরে বাতেন ক্বলবে নিয়ে খোদার গোপন অস্তিত্ব অনুভবের বিরল সুযোগ। এ নূর আমানত থাকে সেই বান্দাগণের সিনা মোবারকে; যাঁদের ধমণী শিরায় প্রবাহিত হয় নবীজির রক্ত মোবারক, অধিষ্টিত থাকেন গাউছিয়তের মকামে, ধরণীতে যাদের পরিচয় হয়Ñ কুতবুল আকতাব তথা গাউছুল আজম উপাধিতে। একবিংশ শতাব্দির মাহেদ্রেক্ষণে খোদা নবীর দয়ায় চট্টগ্রামের রাউজানের কাগতিয়ার পাক জমিনে আমরা পেয়েছি এমন একজন কালজয়ী রাহবারকে যিনি সিনা-ব-সিনা তাওয়াজ্জুহ্র মাধ্যমে সেই নূর বিতরণ করে যায়েছন পুরুষদেরকে সামনা সামনি বসিয়ে তাওয়াজ্জুহ-বিল-হাজের এর মাধ্যমে আর মহিলাদেরকে শরীয়তের বিধি বিধান মেনে পর্র্দার যথাযথ আইন অনুসরণ করে তাওয়াজ্জুহ-বিল-গায়েব এর মাধ্যমে। যেখানে মহিলাদেরকে আসতে হয় না গাউছুল আজমের সামনে, গাউছুল আজমকেও যেতে হয় না মহিলাদের সামনে।
নবীজির এ নূর তাওয়াজ্জুহ্র মাধ্যমে ক্বলবে নিলে ঠান্ডা, গরম, ভারী বা কম্পন যে কোন এক অবস্তা অনুভব হলে ক্বলব যে আল্লাহর স্মরণে মশগুল হয় তার প্রমাণ বহন করে। আর যে পদ্ধতিতে এ নূর অনুভব করা যায় তার নাম হলোÑ মোরাকাবা বা আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকা। নবীজির কাছে নূরে কোরআন আসলে অনুরুপ অনুভূতির সঞ্চার হতো। এ নূর গ্রহণকারী ব্যক্তির মধ্যে অভ্যন্তরীণ উপলব্ধির কারণে বিশেষ কিছু বাহ্যিক পরিবর্তন সাধিত হয়। মিশকাত শরীফের ৪৪৬ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হাদিস শরীফের ভাষ্য মতেÑ এ নূর গ্রহণকারী ব্যক্তি (১) দুনিয়ার অনিয়ম মায়া মোহ হতে দূরে সরে যায়; (২) পরকালের দিকে ধাবিত হয়; (৩) মৃত্যুর পূর্বেই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
নবীজির এ নূর অশান্ত হৃদয়কে করে শান্ত, দিশেহারা জীবনকে করে প্রেমময় প্রশান্ত। আল্লাহর ভয়ে হয় ভীত, আশেকে রাসূল রুপে হয় স্বীক
ত। তাকওয়া তাওয়াক্কুলে করে জীবন অতিবাহিত, নবীকে দেখার লাগি দু’নয়নে হয় অশ্রæ প্রবাহিত। অতীতের পাপের জন্য হয় অনুতাপে জর্জরিত, ইনসানিয়তের অনুভূতি হয় হৃদয়ে জাগ্রত। এভাবেই পরকালের প্রস্তুতিকে করে আরো শাণিত, নূরে মোহাম্মদীর রওশনে হয় আঁধার জীবন আলোকিত। যে আলোতে মিলে সিরাতুল মোস্তাকিমের ঠিকানা, লা মকানের অভিযাত্রার হয় শুভ সূচনা। পরিশেষে হয় আলোকিত মানুষ হওয়ার উপাখ্যান রচনা। আর লক্ষ লক্ষ সত্যিকারের আলোকিত মানুষ তথা ইনসানে কামেল সৃষ্টির মহারুপকার কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ হযরত গাউছুল আজম। যাঁর কালজয়ী দর্শনে নূরে মোহাম্মদীর আহবানে পথহারা মানবতা পেল সুপথের সন্ধান, মা’রেফাতের ইলম তথা অমূল্য ইহসান। যারি পথ ধরে বইবে শান্তির সুবাতাস চির অমলিন, ধূসর এ ধরণী হবে নূরে মোহাম্মদীর রুপেতে রঙিন, হৃদয়ে হৃদয়ে বইবে শান্তি সীমাহীন। এভাবে বদলে যাবে ব্যক্তি, বদলে যাবে দেশ, সম্প্রীতির বাহুডোরে বাধা রবে সামাজিক পরিবেশ, অনাবিল শান্তিতে ভরে উঠবে প্রিয় স্বদেশ।
আরাধ্য শান্তির পয়গাম নিয়ে নূরে মোহাম্মদীর বাস্তব উপলব্ধির প্রত্যয়কে সামনে নিয়ে আগামী ১৪ জানুয়ারি, সোমবার বেলা ১টা হতে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে যায়েছ ঐতিহাসিক গাউছুল আজম কনফারেন্স। আসুন শামিল হই গাউছিয়তের প্রেম মঞ্জিলে, যেখানে খোদাকে পাবার নবীকে দেখার স্বপ্ন এঁকে দেওয়া হয় নিভ
তে নিরলে, রহস্যজগত পড়বে চোখে দেখে যদি ভালোবাসার দৃষ্টি মেলে। তবে দূর হবে দুনিয়ার মোহ, ক্বলবে মিলিবে জান্নাতি শান্তি সুষমা অহরহ, জীবনে বইবে প্রেম নূরের প্রবাহ, হৃদয়ে দুলিবে হেদায়তের আবহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন