এ টি এম রফিক, খুলনা থেকে : সম্প্রতি সরকার অনুমোদিত বাগেরহাট জেলার পোল্ডÍার নং-৩৬/১-এর পুনর্বাসন প্রকল্পটি একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আড়ালে একজন ঠিকাদারকে পোল্ডÍার প্রকল্পের কাজটি দেয়ার জন্য একটি অশুভ তৎপরতা চলছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলে ঠিকাদারদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। সরকারের ক্রয় আইনে এই ধরনের ডিপিএম পদ্বতিতে কাজ পাইয়ে দেয়ার কোনো বিধান নেই। এটা ক্রয় আইনের সুস্পষ্ট লংঘন ও দুর্নীতির শামিল হলেও এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সরকারের ক্রয় আইনকে বৃদ্বাঙ্গুলি দেখিয়ে টেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে শত শত কোটি টাকা লোপাট করে চলেছে।
ঠিকাদাররা জানায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ডিপিএম পদ্বতিতে দুই বছর যাবৎ এ ধরনের অপতৎপরতা চলে আসছে যা পিপিআর বহির্ভূত। সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে টেন্ডার প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে এক ধরনের স্বার্থান্বেষী মহল সরকারের ক্ষমতাধর কিছু ব্যক্তি বিশেষকে দিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত যোগ্য ঠিকাদারকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে ডিপিএম-এর মাধ্যমে কিছুসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের নামে শত শত কোটি টাকার কাজ নিজেরা কুক্ষিগত করছে। যা এ ধরনের কাজের মান এত নিম্নমানের যাতে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা রক্ষা করাতো দূরের কথা বরং এই কোস্টাল বেল্ট এলাকাকে চিরতর ধ্বংস করার উপক্রম হয়েছে। এ পদ্ধতিতে উচ্চদরে কাজের অনুমোদন দেয়ায় সরকারের শত শত কোটি টাকা অবচয় হচ্ছে। এ কাজসমূহ তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের দ্বারা করলে কাজের গুণগত মান ও অর্থের সাশ্রয় হতো। সাব-কন্টাকের মাধ্যমে কাজ করার জন্য কাজের গতি ও মান খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। অতিবিলম্বে এ প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে খুলনা বিভাগের তথা সারাদেশের কোস্টাল বেল্ট ধ্বংসসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের যোগ্যতাসম্পন্ন ঠিকাদাররাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত যেমন হবে তেমনি সরকারেরও কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যাবে ।
প্রকাশ থাকে যে, ৩৬/১ নং পোল্ডার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় করার জন্য ২৮২ দশমিক ৮২ কোটি টাকা একনেকের সভায় অনুমদিত হয়। উক্ত কাজগুলো তালিকাভুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ঠিকাদারের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলকভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহŸান করে করা হলে সরকারের ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। একই সাথে তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের প্রাণসঞ্চার হবে। ইতিমধ্যেই ডিপিএম পদ্ধতির মাধ্যমে যশোর পওর সার্কেলের অধীনে খুলনা শিপইয়ার্ড লিঃ-এর মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদীর পুনঃ খনন ও ১৮ বেকি নদী পুনঃ খনন ডিজেল প্লান্ট সংস্থার নিকট থেকে সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে কিছু অসাধু ও অযোগ্য ঠিকাদার যে কাজ করছেন তা নিম্নমানের এবং হতাশাব্যঞ্চক। বর্ণিত কাজ একজন সাব-কন্ট্রাক্ট নেবার জন্য কাজের সময় অপচয় হচ্ছে সাথে সাথে সরকারের কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।
সাতক্ষীরা পওর বিভাগ ২-এর পাতাখালী ক্লোজারটি ৭ কোটি টাকায় নেয়া হলে ও তা শেষ করতে ১৮ কোটি টাকায় ব্যয় হয়েছে। এখানে প্রায় ১০/১২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এ ছাড়া খুলনার ১৮ বেকি নদী পুনঃ খননে ১২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেয়া হলে ও তা সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে করানোর কারণে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২০০ কোটি টাকায়। যা লোপাট হবে কোটি কোটি টাকা। এ সব অনিয়ম রুখতে খুুলনা অঞ্চলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারগণ দুই-এক দিনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন