সম্প্রতি সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার রাতের ঘুম নষ্ট করে দিতে পারে। মোবাইল কোম্পানি সমূহের অর্থে পরিচালিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য এই যে, হ্যান্ডসেটের রেডিয়েশনের জন্য তন্দ্রাহীনতা, মাথাব্যথা এবং সন্দেহ বা সংশয় দেখা দিতে পারে। এর ফলে আমাদের গভীর স্বাভাবিক এবং পর্যাপ্ত ঘুম কমে যেতে পারে এবং শারীরিক প্রফুল্লতার ক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে। এই সমীক্ষাটি পরিচালিত হয় সুইডেনস্থ ক্যারোলিন্সকা ইনিস্টিটিউট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। মোবাইল প্রস্ততকারক ফোরামের ফান্ডে বিজ্ঞানীরা ১৮-৪৫ বছর বয়সের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ এবং ৩৬ জন মহিলার ওপর গবেষণা করেছেন। কিছু লোকের রেডিয়েশনে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারেও একই ক্ষতি হয়েছে। অন্যদের একই অবস্থায় রাখা হয়েছিল কিন্তু শুধুমাত্র “শ্যাম” একস্পোজার দেয়া হয়েছে। যাদেরকে রেডিয়েশনে বেশি সময় রাখা হয়েছিল তাদের গভীর ঘুমে যেতে বেশি সময় লেগেছিল এবং অল্পসময়ের জন্য গভীরভাবে ঘুমিয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের পরিসমাপ্তি, “ল্যাবরেটরিতে ৮৮৪ মেগাহার্টসে সিগনাল ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং দৈনন্দিন কাজকর্মও ব্যহত হয়”। গবেষক অধ্যাপক বেনট আরনেট বলেছেন, পরীক্ষায় প্রতীয়মান হয় যে মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইনের বিশেষ পরিবর্তন হয় যা সংবেদনশীলতাকে বাড়িয়ে দেয়। অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে, রেডিয়েশন
“মেলাটোনিন” যা দেহের অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার প্রবাহকে ধরে রাখে, তার উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটায়।
বৈদ্যুতিক সংবেদনশীলতা :
এই সমীক্ষায় প্রায় অর্ধেক লোক তাদেরকে “বিদ্যুৎ সংবেদনশীল” বলে মনে করেন এবং তাদের মাথাব্যথা এবং ¯œায়ুবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারেন না মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের জন্য ইহা হয় কিনা।
স্বাস্থ্যের ওপর ইলেকট্রো-মেগনেটিকের প্রভাব বা প্রতিক্রিয়ার গবেষক মি: এলাসডেয়ার ফিলিপস্্ যিনি পাওয়ার ওয়াচের পরিচালক মনে করেন যে মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন প্রতিক্রিয়ার সুস্পষ্ট ধারণা আছে, তাই আমাদের আরো সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। গবেষণায় জানানো হয় যে যদি বিকেলে বা রাতে ফোনে কথা বলতে হয়, তাই মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করা ভালো এবং বিছানার পাশে মোবাইল ফোন না রাখাই উত্তম কাজ।
যদিও মি: মাইক দোলান, মোবাইল অপারেটর এসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ওই ধারণার সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ইহা বিজ্ঞানের মহাসমুদ্রে এক বিন্দু পানি মাত্র। এক কাপ কফি পান করলে যা ক্ষতি হয়, তা এর চেয়েও কম। গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন এবং হেলথ রিসার্চ প্রোগ্রামের উদ্যোগে ছয় বছরব্যাপী এক সমীক্ষায় উপসংহারে বলা হয় যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেইনের স্বল্পকালীন সমস্যা হয় না। কিন্তু গবেষকগণ দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। যুক্তরাজ্যের মোবাইল ফোনের সার্ভিস সমূহ ৮৭২ হতে ৯৬০ মেগাহার্টস, ১৭১০ হতে ১৮৭৫ মেগাহার্টস এবং ১৯২০ হতে ২১৭০ মেগাহার্টসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। (সূত্র : অ্যামেরিকান একাডেমি অব অটোল্যারিংগোলজি-হেড এন্ড নেক সার্জারি)।
ষ অধ্যাপক ডাঃ এম আলমগীর চৌধুরী
নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন
বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি বিভাগ
আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
রোড ৮, ধানমন্ডি, ঢাকা, ০১৯১৯২২২১৮২
ই-মেইল : ধষধসমরৎ.ঈযড়ফিযঁৎু০৭@ মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন