শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

দখল-দূষণে পাবনার ইছামতি মৃত

মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী। এই নদী কালের সাক্ষী। পদ্মার নদী থেকে ইছামতি নদীর উৎপত্তি। পাবনা শহর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইছামতি নদী পাবনার জেলার হুরাসাগর নদীতে পড়েছে। ইছামতি নদী হুরাসাগর নদীর উপনদী। পদ্মা ও আত্রাই নদী থেকে পানি প্রবাহ নিয়ে ইছামতি নদী হুরাসাগরে নিয়ে যেতো। হুরাসাগর নদীর পানি প্রবাহ আরও বৃদ্ধিমান ছিল। ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের আঘাতে কালক্রমে ইছামতি নদী আদি আদল হারিয়ে পাবনা শহরের ৬ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় মৃতবৎ অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘ ৪০ বছরকাল।

ইছামতি নদী প্রবাহমান থাকাকালে রাজধানী ঢাকার সাথে পাবনা ও এর আশপাশের জেলা সমূহের নদী ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল। শহরের খেয়াখাটে লঞ্চ-স্টিমার, এবং রূপকথা সড়কের শেষ মাথায় বড় বড় গয়নার নৌকা ভিড়ত। সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিভিন্ন নদীতে পানির টান পড়ায় কালে কালে এই নদী নাব্য ও পানির প্রবাহ হারিয়ে ফেলেছে। ইছমতি নদী বলতে পাবনা শহরে এখন মরাখাল। এই নদীকে তার আদিরুপে ফেরানো না গেলেও অন্তত নাব্য বাড়িয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এই কাজ কয়েকবার করাও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধু অর্থ গেছে পানিহীন নদীতে। অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় ইছামতি নদী পাবনা শহরে তার আদি চেহারা ফিরে পায়নি। নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় নর্দমায় পরিণত হয়েছে। শহরের প্রায় অধিকাংশ আর্বজনা, বর্জ্য এই নদীতে ফেলায় শহরের বায়ু দূষণ ও গন্ধ ছড়িয়ে নাগরিক জীবনকে করে তুলেছে বিষময়।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদী জোরপূর্বক দখল করে বাড়ি ঘর বানানো হচ্ছে। এই নদী খনন করে রক্ষার দাবিতে শহরের নাগরিকরা একাট্টা হয়েছেন। তারা মানববন্ধন কর্মসূচি, স্মারকলিপি প্রদান করে যাচ্ছেন। ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, নদী খনন ও পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবিতে গতকাল শনিবার পাবনার প্রধান সড়কে একটি বিশাল মানববন্ধন করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইছামতি উদ্ধার আন্দোলন ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে পাবনার রাজনীতিবিদ, আইনজীবী , শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ শরিক হন।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাফিউল ইসলাম বলেন, যে নদীকে নিয়ে এত মানুষ আন্দোলন করছেন, পাবনার সেই ইছামতি নদী অবশ্যই খনন হবে, দখলদার উচ্ছেদ হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন