ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাজিয়াতলী এলাকার বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের ২০২৯ পিলারের কাছে শূন্য রেখায় ৩১ জন নারী-পুরুষ ও শিশু রোহিঙ্গা গত চারদিন ধরে অবস্থান করছেন। প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যে ধানের জমিতে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসু হয়নি।
গত ১৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে আটটায় বিএসএফ গেইট খুলে নারী পুরুষ শিশুসহ ৩১ জনের একটি দলকে বাংলাদেশে পুশইন এর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে বিজিবি শূন্য রেখায় আগত দলটিকে থামিয়ে দেয়। বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফ কমান্ডারকে বিষয়টি জানালে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না পরে খোঁজ নিয়ে জানাবেন। পরবর্তীতে বিজিবির পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়।
একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সীমান্তের একশ গজের মধ্যে ভারত থেকে আগত দলটির উপস্থিতির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয় এবং তাদের ফিরিয়ে নেবার আহবান জানানো হয়। বিএসএফএর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অপরাগতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ থেকে তাদের পুশ ইন করা হয়েছে বলে বিজিবিকে দোষারোপ করে। ফলে রোহিঙ্গারা ভারতীয় শূন্যরেখায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভারতীয় কোন প্রমান আছে কিনা বিএসএফ জানতে চায়। তখন থেকে ১৭ শিশু এবং ৬ নারী, ৮ পুরুষসহ ৩১ সদস্যের এ দলটি বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমান্তের শূন্যরেখা অবস্থান করছে। এসব ঘটনার পর বিজিবি ওই অঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করেছে বলে বিজিবি সূত্র জানায়।
এদিকে রোহিঙ্গারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়ার কারণে অনেকেই শীত জনিত অসুস্থতায় ভুগছেন বলে জানা গেছে। সকালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা তাদেরকে খবার সরবরাহ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাঙ্গীর।
এদিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে আশ্রয় নেয়া লোকদের কাছ থেকে ইউএনএইচআরসি কর্তৃক প্রদও রিফিউজি কার্ড, রিফিউজি সার্টিফিকেট, জম্মু-কাশ্মির ইন্টিগ্রেডেট চাইল্ড ডেভেলাভমেন্ট ন্যাশনাল হেলথ মিশন জম্মু এন্ড কাশ্মিরের হেলথ কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। যেসব কার্ডের মেয়াদ আরো পাঁচ ছয় মাস পর্যন্ত রয়েছে। এসব কার্ডে লেখা রয়েছে জোর পূর্বক তাদের দেশ থেকে বের করা যাবে না। আশ্রয় নেয়াদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন কার্ড ও স্থানীয় তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিয়মান হচ্ছে তারা ভারতে আশ্রয় নেয়া অন্য কোন দেশের নাগরিক।
বিজিবির সূত্র জানায়, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)র ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক হলে এর সমাধান হয়নি। তবে আশা করা যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন