সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে মসজিদ দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন সিসিকের ৯ নং ওয়ার্ডের মদীনা মার্কেট আল মদিনা জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লি খলিলুর রহমান খান।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, তার পিতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক ১৯৮২ সালে নিজের নামীয় জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াকফ এস্টেট হিসেবে নিবন্ধিত করে দেন। ওই জায়গায় নির্মিত হয় আল মদিনা জামে মসজিদ। মসজিদের আয়ের খাত বাড়ানোর জন্য বাগবাড়ি রাস্তা সংলগ্ন অংশে ১২টি দোকান কোটা নির্মাণ করা হয়।
কামরানের দুর সম্পর্কীয় চাচা আব্দুল মুকিত জাহাঙ্গীরগংদের নামে ১৯৮২ সালে মসজিদ নির্মাণের পর ৫টি দোকান ২শ‘ টাকা ভাড়া ধার্য্যক্রমে লীজ নেওয়া হয়। দীর্ঘ বছর পর ২০০৮ সালে মসজিদ কর্তৃপক্ষ দোকানের ভাড়া বৃদ্ধি করতে চাইলে তারা আদালতে মামলা করে লীজ স্থগিত করে দেয় এবং ২শ’ টাকা করে দোকানভাড়া আদালতে জমা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাকি আরো ৭টি দোকানেরও দু‘টির মামলা চলমান রয়েছে আদালতে এবং ৫টি দোকানের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে নিয়মিত ভাড়া যাচ্ছে মসজিদের ফান্ডে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মখলিছুর রহমান কামরান সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে পেশি শক্তি ব্যবহার করে মসজিদের নামীয় আমার পিতার দেওয়া ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে ২০১০ সালে তাদের বিরুদ্ধে সিলেট জেলা যুগ্ম জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলা (স্বত্ব মামলা-নং ২২১) দায়ের করেন মসজিদের মোতাওয়াল্লি খলিলুর রহমান। আদালত আবেদন গ্রহণ করে ২০১২ সালের ২৩ জুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পক্ষে রায় আসাতে কামরান গংরা জেলা জজ আদালতে আপিল (মামলা নং-৪৬/১২) দায়ের করেন। ওই আপীলও খারিজ করে জেলা যুগ্ম জজ দ্বিতীয় আদালতের আগের রায় রহাল রাখেন।
কিন্তু কামরান সিলেটের আদালতে ব্যর্থ হয়ে উচ্চ আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা (নং-১৭৯৯/১৮) দায়ের করেন। উচ্চ আদালত থেকে এই মামলায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পক্ষগণকে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা বজার রাখার আদেশ দেন। উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর ওয়াকফ প্রশাসনের তরফ থেকে পক্ষগণকে হাইকোর্টে আদেশ মেনে চলার জন্য একটি পত্রও জারি করেন।
তারপরও উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে অবজ্ঞা করেও তারা পেশিশক্তির জোরে বেআইনীভাবে জোরপূর্বক মসজিদের দোকান দখল করা ছাড়াও কমিটির নিয়ন্ত্রন তাদের হাতে নিতে অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। মসজিদের ভেতর পিস্তল নিয়ে ঢোকে কমিটির মানুষকেও হুমকী দিয়েছেন কাউন্সিলর কামরান। এছাড়া উচ্চ আদালতের রায় তাদের পক্ষে প্রচারণা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। মূলত; মসজিদে দানকৃত টাকা ও আয়ের খাত কুক্ষিগত করতে এমন অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন কাউন্সিলর কামরান গংরা।
খলিলুর রহমান বলেন, মসজিদের প্রথম মোতাওয়াল্লি তার বাবা ভূমিদাতা মরহুমদ আব্দুর রাজ্জাক, দ্বিতীয় মোতাওয়াল্লি ছিলেন তার খলিলের বড় ভাই মরহুম আব্দুল খালিক খান, এখন তিনি নিজে ওয়াকফ এস্টেটের বৈধ মোতাওয়াল্লি হওয়া স্বত্বেও তারা তাকে সরিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ কামরান গংরা ওই মসজিদের মুসল্লীও না, ওয়াকফ পরিবারেরও কিছু না।
পূণ্যভূমি সিলেটে মসজিদ নিয়ে কূচক্রীমহলের ষড়যন্ত্র রুখতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ওয়াকফ পরিবারের সদস্য আ‘লীগ নেতা জুবের খান, সায়েম খান, দুলাল খান, হাবিবুর রহমান, ইব্রাহিম আলী খান, মাহবুবুর রহমান, সারোয়ার খারুকী টুটুল, মামুনুর রহমান, হেলাল আহমদ, সাগির আহমদ, মাহমুদুন নবী, তোফায়েল আহমদ, আব্দুল কাইয়ুম, ফরহাদ বক্স, ইব্রাহিম আহমদ শুভ, আনসার আহমদ, মো. হোসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন