বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

সন্ত্রাস দমনে একসঙ্গে লড়বে ঢাকা-দিল্লী

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:১৪ এএম, ১৩ মে, ২০১৬

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ দমন করবে। এ জন্য এখন দুই দেশের মধ্যে যে কাঠামো রয়েছে তা ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদ এ অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দুই দেশের জন্যই সংকট তৈরি করছে। সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশ-ভারতের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় এ সব কথা বলেন তারা। বৈঠকটি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং ভারতের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের যুগ্মসচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোয়োজ্জেম আলী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জয়শঙ্কর বলেন, আমি সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সরকারের পদক্ষেপের প্রতি শক্তিশালী সমর্থন ব্যক্ত করতে এসেছি। এটি এমন একটি সংকট যা প্রতিবেশি হিসেবে আমাদের দুই দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। এ ইস্যুতে আমরা দুই দেশ একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নয়া দিল্লি সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আমি আশ্বস্ত করছি। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে এটি (সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ) আমাদের জন্য উদ্বেগের। এ ব্যাপারে ঢাকার সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগ রেখে চলেছে নয়াদিল্লি এবং (সন্ত্রাস দমনে) এক সাথে কাজ করে যাচ্ছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে নয়াদিল্লি।
তিনি বলেন, বৈঠকে এছাড়াও বাংলাদেশে কীভাবে আরও বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দিয়ে উন্নয়নে সহযোগিতা করা যায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও কীভাবে অগ্রগতি করা যায় সেজন্য দুই দেশের জ্বালানি মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছুদিন আগে ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিজেল পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সমুদ্র দিয়ে দুই দেশের মধ্যে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে খুবই ইতিবাচক ফিডব্যাক পাওয়া গেছে। ইদানিং বাংলাদেশি জাহাজ ভারতের বন্দরে মালামাল খালাস করছে। সামনের দিকে ভারতের বেসরকারি বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠা হবে এমন বেশকিছু পাওয়ার প্রজেক্টের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ভারতের ঋণে বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৮টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি প্রকল্পগুলো অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান জয়শঙ্কর।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের উদ্দেশে জয়শঙ্কর বলেন, আমি আমার কাউন্টার পার্টকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তিনি আমাদের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ ও নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। তার সঙ্গে আমার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি খুব ভালো সফর হয়েছে। আমি দেশে ফিরে যাচ্ছি আমাদের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে এ বার্তা নিয়ে।
এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, সন্ত্রাস দমনে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয়ভাবে কাজ করবে। আমরা সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছি। এ বিষয়ে তথ্য (নোট) বিনিময় করেছি। আমাদের ও তাদের বিশ্লেষণের মধ্যে প্রচুর মিল আছে। আমরা মনে করি একসঙ্গে কাজ করলে এটা কমিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের সময় যেসব প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন তার অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গত সাড়ে তিন মাসে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা এ বিষয়ে আশাবাদী। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু ছাড়াও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক জানান, আগামী অক্টোবরে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে, গত বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন জয়শঙ্কর। গত বুধবার ঢাকায় আসেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন