প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরেও জেলার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ১৮ চিকিৎসকের মধ্যে ১৩ জনই অনুপস্থিত থাকেন। গত মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারী) থেকে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারী) পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবার কোন পরিবর্তন চোখে পড়েনি। এখানে ৪০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও পোস্টিং রয়েছে মাত্র ১৮ জনের। ২২ চিকিৎসকের পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। ১৮ জন পদায়নে থাকলেও গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাত্র ৫ জন চিকিৎসককে হাসপাতালে দেখা গেছে। ৫ জন চিকিৎসক রয়েছে প্রেষণে, ১জন সাময়িক বরখাস্ত, ট্রেনিং, ছুটি ও পরীক্ষার কারণে অনুপস্থিত ৪ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একদিনের ট্রেনিং এ অনুপস্থিত থাকলেও ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বৃহস্পতিবার থেকে ট্রেনিং এর কোন কাগজ তার অফিসের কেউ দেখাতে পারেনি। এছাড়াও হাসপাতালে বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ১শ’ পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালে গিয়ে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলার ১৯ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদ ৪০। অথচ পদায়ন রয়েছে ১৮ জন। এর মধ্যে ডা. শেখ সাইফুল, ডা. হোসনে আরা, ডা. রুবিনা আক্তার, ডা. বর্ষা ফাচিন্তা সরেন, ডা. ইশরাত জাহান প্রেষণে অন্যত্র রয়েছেন। ডা. মাহমুদুল হাছান আকাশ সাময়িক বরখাস্ত। বাকি ১২ জনের মধ্যে সোমবার সকাল সাড়ে দশ টায় হাসপাতাল গিয়ে ডা. মো. মইনুল, ডা. আদনান, ডা. মো. মোকাদ্দেস, ডা. মো. মনিরুজ্জামান, ডা. মানষী সরকারসহ ৫ চিকিৎসককে দেখা যায়। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চিকিৎসক ডা. স্বপন ধরকেও হাসপাতালে ছিলেন। ট্রেনিং, ছুটি ও পরীক্ষার কারণে অনুপস্থিত ছিলেন ডা. মাহমুদুল হাসান, ডা. হারুনুর রশীদ খান, ডা. এবিএম রাকিবুল হাসান, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. ইকরামুল হক। ডা. সঞ্জয় হালদার রয়েছেন ইউনিয়ন পর্যায়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খলিলুর রহমান রয়েছেন ট্রেনিংএ। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে গিয়ে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সত্যরঞ্জন রায় বৃহস্পতিবার থেকে ট্রেনিংএ থাকার কথা বললেও কোন ধরনের অফিসিয়াল নথি কেউ দেখাতে পারেনি।
এছাড়াও শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে জনবল সঙ্কট। এর মধ্যে ৩য় শ্রেণির পদ শুন্য রয়েছে ৬০, ২য় শ্রেণির পদ শুন্য রয়েছে ২, চতুর্থ শ্রেণির পদ শুন্য ৩ ও প্রেষনে রয়েছে ২জন।
কর্তব্যরত ডা. মো. মইনুল বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম থাকলেও আমরা চিকিৎসাসেবা ভাল মতো চালিয়ে যাচ্ছি।’
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সত্যরঞ্জন রায় বলেন, ‘আমি ঢাকায় ট্রেনিংএ আছি। আমার ডিডি সাহেব ফিল্ডে রয়েছেন।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি একদিনের ট্রেনিংএ আছি। চিকিৎসক কম থাকায় স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে অনেক জায়গার চেয়ে আমাদের এখানে স্বাস্থ্যসেবার মান ভাল।’
মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. ফরিদউদ্দিন মিয়া জনবল সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আগামী বিসিএস শেষে চিকিৎসক সঙ্কট কেটে যাবে। অন্য জনবল সঙ্কট কাটাতে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে এ সকল সঙ্কট দূর হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন