আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বের ঘটনা জের ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বাস ভাঙচুর করে এবং ক্যাম্পাসে একাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদসহ অন্তত ১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। গতকাল রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের উভয় পক্ষের হাতেই দেশীয় অস্ত্র- চাপাতি, রড, স্ট্যাম্প, লাঠি ইত্যাদি দেখা যায়। সংঘর্ষের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসের স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ছয়টায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স¦াক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, প্রেম গঠিত কারণে গত বৃহস্পতিবার শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রæপের কর্মী তুহিনকে মারধর করে সভাপতি গ্রæপের কর্মীরা। পরে সম্পাদকের কর্মীরা একত্রিত হয়ে সভাপতি গ্রæপের কর্মী নয়ন ও রিফাতকে মারধর করে। এর জেরে রবিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকের কর্মীরা গ্রæপের কর্র্মীরা একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারের সামনে ও বিজ্ঞান ভবন চত্বরে অবস্থান নেয়। মহড়া দেয়ার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা একে অপরকে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া দেয় এসময় দুগ্রæপের কর্মীরা লাঠিসোটা,লোহার রড,হাতুরী,চাপািতসহ একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। সভাপতি গ্রæপের কর্মীরা সাধারণ সম্পাদকের গ্রæপের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাসের পিছনের গেট দিয়ে বের করে দেয়। সাড়ে এগাড়টার দিকে সাধারণ সম্পাদক কর্মীরা প্রধান ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে সভাপতি গ্রপের কর্মীরা তাদের আবার ধাওয়া করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ার মাঝখানে পরে যায়। সহকারী প্রক্টর শাহীন মোল্লাসহ কয়েকজন ইটের আঘাতে আহত হন।
দুপুর ১টার দিকে ক্যাম্পাসের ভিতরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে সাধারণ সম্পাদেকর কর্মীরা আবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে সভাপতি গ্রপের কর্মীরা তাদের ওপর আবার হামলা করে। এদিকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় রফিক ভবন ও অবকাশ ভবনের বারান্দায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাড়িয়ে থাকলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের ওপরও ইটপাটকেল ছোঁড়ে। অবকাশ ভবনের তৃতীয় তলা সাংবাদিক সমিতি থেকে সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি ও ভিডিও করতে চাইলে ছাত্রলীগের নারী কর্মীরা সমিতির ভিতর প্রবেশ করে সাংবাদিকদের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী খালিদ মাহমুদ সুযন (১৩ তম ব্যাচ), সামসুল হুদা গাজী (১৩তম ব্যাচ), মামুন (১২তম ব্যাচ), মাহফুজ (১২তম ব্যাচ), প্রান্ত (১২তম ব্যাচ), রেজওয়ান, ইশরাক চৌধুরী (১৪তম ব্যাচ), নোমান সহ ১৫ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার,সুমনা হাসপাতাল,ন্যাশনাল হাসপাতাল,মিডপোর্ট হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আজকের বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে বলেছি। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন