শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মুক্তি মেলে না আলামতের গাড়ির

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, কুমিল্লা থেকে: | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার বিভিন্ন থানার সামনে খোলা আকাশের নীচে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার অধিক মূল্যের বিভিন্ন যানবাহন। মামলার আলামত হিসেবে এগুলো আটক বা জব্দ হলেও সংরক্ষণের অভাবে এ সকল যানবাহন সমূহ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশেরও যেন এক্ষেত্রে করণীয় কিছু নেই। পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশের সর্বাধিক ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর আওতাধীন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, ছিনতাই কাজে ব্যবহার বা ছিনতাই হওয়া গাড়ি, মাদক বহন, ডাকাত কবলিত ইত্যাদি নানা কারণে মামলা সংশ্লিষ্ট হওয়ায় এসব যানবাহনও আটক করে থানা পুলিশ। আসামিরা গ্রেফতার বা আটক হলে থানা থেকে আদালত হয়ে কারাগার বা মুক্তি হলেও যানবাহনগুলোর মুক্তি কিছুতেই মিলছে না। খোলা আকাশের নীচে রৌদ্রে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। অরক্ষিত থাকার কারণে প্রতিনিয়ত এসকল যানবাহন থেকে একটি চক্র বিভিন্ন সময় খুলে নিয়ে যাচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। এভাবে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়ায় সচল থাকা গাড়িগুলো অচল হয়ে পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, সদর দক্ষিণ ও কোতোয়ালী থানার সামনে খালি জায়গায় উন্মুক্ত খোলা আকাশসহ থানার সীমানা সংলগ্ন এলাকায় পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ব্যান্ডের দামি মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিক্সা, ট্টাক, বাস, কভার্ডভ্যানসহ প্রায় শতাধিক যানবাহন। এর মাঝে মোটরসাইকেল প্রায় দুই শতাধিক। বাকি অর্ধশত মাঝারী ও ভারী যানবাহন।
সূত্রমতে, এ সকল গাড়ি আটক হয়ে থানা কম্পাউন্ডে আসার পর থেকে একটি দৃর্বৃত্তচক্র মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি করা শুরু করে। শুধুমাত্র গাড়ির বডি ছাড়া বাকি সব যন্ত্রাংশই চুরি হয়। আর মামলার দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে এ সকল যানবাহনগুলো আস্তে আস্তে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে করে এক সময় মামলার আলামতগুলো নষ্ট হয়ে পড়ছে। থানা পুলিশ যদি এক্ষেত্রে মামলার জব্দ করা আলামতগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতো তা হলে গাড়ি সমূহের টায়ার, টিউব থেকে শুরু করে মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হতো না।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া বলেন, দৈনিক অথবা মাসে যে পরিমাণ গাড়ি আমাদের এখানে জমা হচ্ছে সে অনুসারে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আইনি জটিলতার ফলে জব্দ হওয়া বাহনের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। অল্প জায়গায় অধিক যানবাহন রাখার কারণে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ। এ ছাড়া থানার সামনেই এত গাড়ি পড়ে থাকার ফলে অনেক সময় দৈনন্দিন কার্যক্রমও বিঘি্নত হয়। এগুলো রাখার জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা থাকলে আর নষ্ট হতো না। কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অযত্ম-অবহেলায় পড়ে থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করার পরও কেন এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না তা বুঝতে পারছি না। দ্রুততার সাথে এসব মামলা নিষ্পত্তি করলেই আমাদের সম্পদগুলো রক্ষা পাবে। সরকারও রাজস্ব পাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন