টাকা না পেয়ে ভাবিকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনাকে চুরি সাজাতে গিয়ে ফেঁসে গেল দেবর। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে মো. ফরহাদ হোসেন লিমন (২২) এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও স্বীকার করেন। তার দাবি, ভাবির কাছে টাকা চেয়ে পাইনি, আর তাই তাকে খুন করে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামি জিনিসপত্র চুরি করেছি। শুক্রবার দিবাগত রাতে হাসিনা বেগমকে (৩২) হত্যা করা হয়। নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার তালাবদ্ধ বাসা থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের তিনদিনের মাথায় গতকাল (সোমবার) খুনের রহস্য উদঘাটনের কথা জানান নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর সন্দেহভাজন হিসাবে পুলিশ লিমনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে আসে। আর রিমান্ডে সে জানায় খুনের পরিকল্পনার চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ফরহাদ হোসেন লিমন নিয়মিত ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখতেন। ক্রাইম পেট্রোলে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের কেস স্টাডিগুলো দেখানো হয়। তা দেখে ভাবিকে খুন করে এ ঘটনাকে চুরি হিসেবে সাজাতে চেষ্টা করেন তিনি। লিমনের দেওয়া তথ্যে পুলিশ লুট হওয়া কানের দুল, চেইন, ব্রেসলেটসহ স্বর্ণালঙ্কার ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করে। শুক্রবার রাতে হাসিনা বেগমকে হত্যার পর লাশ বাসার একটি কক্ষে তালা মেরে রেখে পালিয়ে যান লিমন। এ ঘটনায় হাসিনা বেগমের ভাই মো. মানিক আকবর শাহ থানায় মামলা দায়ের করেন।
আকবর শাহ থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, লিমন হত্যাকাণ্ডের দিন হাসিনা বেগমের বাসায় টিভি দেখার কথা বলে প্রবেশ করে। পরে রাতে ঘুমিয়ে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী হাসিনা বেগমকে বালিশ চাপায় খুন করে লাশ লুকিয়ে রাখে এবং স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে যায়। হাসিনা বেগমের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর শফিগঞ্জ এলাকার পশ্চিম মাইজচরা। তিনি আকবর শাহ থানাধীন কালির হাট ১নম্বর গলিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং গার্মেন্টে চাকরী করতেন। তার একমাত্র পুত্র একটি মাদরাসায় থেকে পড়ালেখা করছে। আসামি লিমন চাঁদপুরের পাইকপাড়া এলাকার আবুল কাশেম পাটোয়ারীর ছেলে। খুনের সময় হাসিনা বাসায় একা ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন