ময়মনসিংহে ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারী জমিতে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করছেন এক প্রভাবশালী পরিবার। খবর পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও মানছেন না ওই প্রভাবশালীরা। জেলার ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার দত্তপাড়া সুপার মার্কেট এলাকার এ ঘটনায় স্থানীয় পৌর প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুছ ছাত্তার। তিনি জানান, বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য তারা পৌরসভার কোন অনুমতি নেয়নি। প্রভাব খাটিয়ে সরকারী সম্পত্তি জবর দখলমূলে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসনকেও তারা মানছে না।
প্রতিবেশী জাহানারা বেগম জানায়, নির্মাণাধীন ভবনের মালিক ঢাকাস্থ রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যন্ট ডা. এবিএম খোরশেদ আলম ভূঞা জুয়েল ও তার ভাই এটিএম কিবরিয়া কাদের ভূঞা মুক্তা। এবং ডা. জুয়েলের শশুর সাবেক চেয়ারম্যন আতাউর রহমান উপজেলা জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা সদস্য। ফলে তারা স্থানীয় প্রশাসনে প্রভাবশালী।
স্থানীয় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম বাচ্চু জানান, ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বর আমাদের বাসা থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে আমার আংশিক জায়গা জবর দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে জুয়েল ও মুক্তা। এনিয়ে প্রতিবাদ করলেও মুক্তা সন্ত্রাসী আচরণ করে। পরে ভ‚মি অফিস থেকে জমির কাগজপত্র তুলে জানতে পারি তাদের নির্মাণাধীন ভবনের জমি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত।
স্থানীয় পৌর তহসিলদার মো. লুৎফর রহমান জানান, ভবন নির্মাণাধীন জমিটি সরকারের ১নং খাস খতিয়াভুক্ত। ওই জমিতে ভবন নির্মাণের খবর পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নোটিশ টানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভবন মালিকগণ বাধাঁ দেয়। পরে উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মইন উদ্দিন খন্দকার পুলিশ নিয়ে গিয়ে নোটিশ টানিয়েছেন। তহসিলদার আরো জানান, নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বললেও তারা কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করে আদালতে মামলা করেছে। এতে বিজ্ঞ আদালত আমাদেরকে ২০দিনের মধ্যে জবাব দাখিলেও নির্দেশ দিলে আমরা জবাব দিয়েছি। ডা. জুয়েলের ভাই এটিএম কিবরিয়া কাদের ভূঞা মুক্তা জানান, বি.আর.এস মূলে জমিটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। কিন্তু সি.এস, আর.ও.আর মূলে এ জমির মালিক আমার পিতা ডা. জব্বার ভূঞা। তাই নিয়ম মেনেই পাঁচ তলা ভবন নির্মাণের কাজ করছি। ডা. এবিএম খোরশেদ আলম ভূঞা জুয়েল বলেন, ওই ভূমিটি নিয়ে বিজ্ঞ জজ আদালতে মামলা চলছে। ভবন নির্মাণে পুলিশের ক্ষমতা ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
এবিষয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মইন উদ্দিন খন্দকার বলেন, আজকের (১১ ফেব্রুয়ারী) মধ্যে নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এবং দুই একদিনের মধ্যে সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে নির্মাণাধীন স্থাপনা ভেঙে দেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন