শনির দশা থেকে মুক্তি, ভাগ্য সুপ্রসন্ন করা, কিংবা জটিল ও কঠিন রোগ নিরাময়ের কথা বলে কুমিল্লায় চলছে অষ্টধাতুর আংটিসহ রকমারি ওষুধের রমরমা ব্যবসা। কুমিল্লার বিভিন্ন হাটবাজার, কোর্ট চত্বর কিংবা জনবহুল স্থানে অষ্টধাতুর আংটি বেচাকেনার প্রায় অর্ধশত ভ্রাম্যমাণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কথিত অষ্টধাতুর আংটিতে সোনা, রুপা, পিতলসহ আট রকম পদার্থ থাকে বলে দাবি করা হয়, যা বিক্রি হয় ৫১ টাকা থেকে হাজার টাকায়। অষ্টধাতুর আংটির সাহায্যে রোগ নিরাময় লাভের কোনো যৌক্তিকতা মেলেনি। তবুও ধুমছে বেচাকেনা চলছে সর্বত্র। জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কথিত ডাক্তার, কবিরাজ এবং আধ্যাত্মিক ও হারবাল চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ছে। তাদের কথার ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, আসর বসিয়ে হাতুড়ে কবিরাজরা চটকদার কথায় পেটের ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, বাত, আমাশয়, ডায়াবেটিস, সর্দি-কাশি, অ্যাজমা, যৌন রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগ নিরাময়ের শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে ওষুধ বিক্রি করছেন। গ্রামের সহজ-সরল লোকজন তাদের মনভোলানো কথায় বিশ্বাস করে ওষুধ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। এছাড়া এক শ্রেণির দাঁতের ডাক্তার ফুটপাতে মজমা বসিয়ে দাঁত তোলা ও দাঁতের যাবতীয় রোগ নিরাময়ের গ্যারান্টি দিয়ে চিকিৎসা করেন। এদিকে আরেক শ্রেণির ওষুধ ব্যবসায়ী নজরকাড়া শোরুমে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগের ওষুধ বিক্রি করেন চড়া দামে। কিন্তু ব্যবহার করে কোনো উপকার হয়নি বলে দাবি করেন ব্যবহারকারীদের অনেকেই। এ রকম একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তমিজ উদ্দিন জানান, এ আংটির কারণে জাদুটোনা, বাণ ও কুফরি কালাম থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অর্শ, গেজ কিংবা মহিলাদের গোপনীয় নানা জটিল রোগের অব্যর্থ সমাধান হিসেবে অষ্টধাতুর আংটি খুবই উপকারী। মাঝিগাছা গ্রামের সোহেল মিয়া জানান, তিনি দুই মাস আগে কোর্ট চত্ত¡রের এক কবিরাজের কাছ থেকে ৭৫০ টাকা দিয়ে যৌন রোগের ওষুধ কেনেন। ওই ওষুধ সেবনের পর থেকেই তার অসুখ নিরাময় তো দূরের কথা উল্টো শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কার মতো নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুই সপ্তাহ ভর্তি থেকে সুস্থ হন। এ বিষয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ইজাজুল হক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সঠিকভাবে রোগ নিরূপণ ছাড়া কোনো চিকিৎসকও ব্যবস্থাপত্র দিতে পারেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন