শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বজ্রপাতে হতাহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার

প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা না হলেও বজ্রপাতে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার। দেশে বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এ মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ সহায়তা খুবই নগণ্য।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার বজ্রপাতে সারাদেশে অর্ধশতাধিক মানুষ মারা গেছেন। বিষয়টি সরকারের নীতি-নির্ধারকদেরও ভাবিয়ে তুলছে। গতকাল শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ত্রাণ) মো. জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এ জন্য আমরা বজ্রপাতকে দুর্যোগের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে হতাহতদের মানবিক সহায়তার দিতে একটি নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু নীতিমালা চূড়ান্ত না হলেও বজ্রপাতে হতাহতদের সহায়তার বিষয়টি থেমে থাকবে না। তিনি বলেন, বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা করে আমরা দেব। এ জন্য জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে। তারা কাজ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ সহায়তা অপ্রতুল, যথেষ্ট নয়। একজন মৃত মানুষকে তো ফিরিয়ে আনা যায় না। যাতে এটুকু সহায়তা দেয়া হয় যেন গরিব পরিবারের কিছু হলেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়। জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বজ্রপাতে হতাহতদের সহায়তার নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। বজ্রপাতকে দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীতে (স্ট্যান্ডিং অর্ডার অব ডিজাস্টার-এসওডি) যুক্ত করারও উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু বিষয়টি আর এগোচ্ছে না। মাকসুদ কামাল বলেন, বজ্রপাতের ইতিহাস থেকে দেখা গেছে, আগে এটি তেমন ছিল না। আগে বছরে ৯ দিনের মতো বজ্রপাত হতো এখন তা দুই সপ্তাহ হয়েছে। মৌসুমের বাইরেও এখন বজ্রপাত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, দুর্যোগের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতি, হতাহত, স্বাভাবিক জীবন যাত্রার ব্যাহতসহ যে বিষয়গুলো রয়েছে সবই এখন বজ্রপাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। বজ্রপাতে হতাহতদের সহায়তা নীতিমালা কবে নাগাদ চূড়ান্ত ও বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হবেÍ জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন বলেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে সহায়তা দেওয়াটা হচ্ছে বড় কথা। সেটা তো আমরা দিতে পারছি। গত বৃহস্পতিবার বজ্রপাতে ৩৫ জন মারা যান। শুক্রবার মারা যান আরও ১৭ জন। পাবনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) রেখা রানী বালো বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে আমরা স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ করছি। বজ্রপাতে যারা মারা গেছেন তাদের দাফন-কাফনের জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু সহায়তা দেয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বজ্রপাতে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা করে দেব। এক্ষেত্রে আগে সেভাবে কোনো সহায়তা দেওয়া হতো না। শুক্রবারেও বজ্রপাতে পাবনায় মারা গেছেন ৫ জন। বজ্রপাতে হতাহতের বিষয়ে সরকারি কোনো পরিসংখ্যান বা হিসাব নেই। তবে হাতে গোনা কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিষয়টি নিয়ে কাজ করে। দুর্যোগ ফোরাম নামের একটি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বজ্রপাতে ২৬৪ জন মারা গেছেন, ২০১৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন ২১০ জন। বাংলাদেশে বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে কোনো গবেষণা না থাকলেও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, বড় গাছ কমে যাওয়া, বাতাসে সালফার ও নাইট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি, মোবাইলের টাওয়ারের কারণে বজ্রপাত বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন