শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শ্রেণীকক্ষের অভাবে মাঠে ছাউনি দিয়ে পাঠদান

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:২৩ এএম

লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা পহরচান্দা সরকারি প্রাইমারি স্কুলে শ্রেণীকক্ষের অভাবে স্কুলমাঠে টিনের চাল দিয়ে পাঠদান চলে। গ্রামের মানুষেরা নিজেদের টাকা খরচ করে স্কুল ভবনের পাশে টিন দিয়ে ছাউনি করে তাদের সন্তানদের পাঠদানের ব্যবস্থা করেছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ২য় শ্রেণীর ৬৫ জন শিক্ষার্থীকে স্কুলের মাঠে টিনের ছাউনিতে চাটাই বিছিয়ে পাঠদান করাচ্ছিলেন শিক্ষক মুহাম্মদ আবচার উদ্দীন। তিনি বলেন, ক্লাসরুমের অভাবে এলাকাবাসীরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য টিনের চালাটির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এলাকার অধিকাংশই কৃষক হলেও তাদের মাঝে শিক্ষার প্রতি আগ্রহের কমতি নেই।
স্থানীয়রা বলেন, স্কুলের স্যারেরা প্রতিদিন আমাদের বাড়িতে গিয়ে বা দোকানে যেখানে দেখা পাচ্ছে সেখানেই হাতে পায়ে ধরে আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনুরোধে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাই। কিন্তু ক্লাসরুম না থাকায় আমাদের সন্তানদের পড়তে অসুবিধা হচ্ছে। তাই আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে কোনমতে টিনের চালের ব্যবস্থা করেছি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বলেন, দুর্গম এলাকা হওয়ায় আগে এই স্কুলে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তেমন কেউ তদারকি করতেন না। কিন্তু বর্তমানে প্রায়ই সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরিদর্শনে আসেন এবং আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়ে যান। দিন দিন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে চলছে।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় স্কুলটি খুবই অবহেলিত অথচ সম্ভবনাময়ী। এলাকার মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। কয়দিন আগেও এলাকাবাসীরা মিলে গরীব শিক্ষার্থীদের প্রায় ১৫ হাজার টাকার জুতা ও স্কুল ড্রেস কিনে দিয়েছে। তিনি বলেন, স্কুলটিতে একটি ভবন হলে এটি একটি মডেল স্কুলে পরিণত হবে। জরুরী ভিত্তিতে একটি ভবনের জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মহলে লিখিত আবেদন করেছি।
জানা গেছে, ২০০২ সালে নির্মিত ছোট পাকা স্কুল ভবনের ৩ রুমের ১টি শিক্ষকদের অফিস অন্য দুটিতে চলে পাঠদান। শিক্ষার্থী রয়েছে ৩ শতাধিক। এলাকার শেখান্দর পাড়া, আলতাফ মেম্বার পাড়া, আদর্শ গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের বিপরীতে একটি মাত্র স্কুল। প্রায় ৮০ বছর আগে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও দুর্গম এলাকা হওয়ায় এটি সবসময় অবহেলায় পড়ে থাকে।
পুটিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, আমাদের পুটিবিলা গ্রামের স্কুলটি সবচেয়ে পুরনো এবং জনবহুল এলাকায় প্রতিষ্ঠিত। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্বেও স্কুলটির শেণীকক্ষ কম হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্কুলটির একটি ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন