আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ হল ঝালকাঠির নেছারাবাদ দরবার শরীফের ২দিনব্যাপী বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহ্ফিল। আখেরি মুনাজাতের পূর্বে হযরত কায়েদ (রহ.)-এর একমাত্র ছাহেবজাদা আমীরুল মুছলিহীন হযরত মাওলানা মুহম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুর মুসলিম উম্মাহ ও দেশ-জাতির রাহনোমায়ীর উদ্দেশ্যে আলোচনা ও নসীহত পেশ করেন।
নেছারাবাদী হুজুর বলেন, মুসলমান একটি আদর্শগত পরিচয়ের নাম।
নেছারাবাদী হুজুর বলেন, মুসলমান পরিচয়ধারীর প্রধান কর্তব্য হচ্ছে কল্যাণকামী হওয়া। মানুষের জন্য কল্যাণকামীতাই হচ্ছে মুসলমানের প্রধান আদর্শ। সিরাতে মুস্তাকীম হচ্ছেÑনবী-রসূল, সাহাবা আযমায়ীন, আওলিয়ায়ে কেরাম তথা সলফেসালেহীনের পথ। যারা এ পথ হারায়, তারা সিরাতুল মুস্তাকীম হারিয়ে অনিবার্যরূপে ইফরাতী-চরমপন্থী কিংবা তাফরীতী-শিথিলপন্থী হয়ে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। তাদের কারণেই মুসলিম সমাজে নানান বিবাদ-বিশৃঙ্খলা এবং বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। কল্যাণের নামে তারা অকল্যাণ ও অশান্তির বীজ বুনে দেয়।
তিনি বলেন, কল্যাণকামী মানুষের কাজ কি? আল্লাহ তায়ালা এরশাদ ফরমান ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমরাই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তোমাদেরকে বিশ্বমানবের উপকারের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্বমানবের উপকারের পথ হচ্ছে, তোমরা মানবদেরকে ন্যায় ও ধর্মের কাজ করতে আদেশ দেবে এবং অন্যায় ও অধর্মের কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে।’ (সূরা আলে ইমরান:১০০)
নেছারাবাদী হুজুর বলেন, হযরত মুজাদ্দেদে আলফেসানী (রহ.) হযরত শাহ্ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী (রহ.) হযরত শাহজালাল ইয়ামনী (রহ.) গরীব-নেওয়াজ খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী (রহ.) হযরত আবুবকর সিদ্দীকী আল-কুরায়শী ফুরফুরাভী (রহ.) গওসে যমান শাহ্ সূফী হযরত নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ.) এবং মুজাদ্দেদে মিল্লাত হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) প্রমুখ কণ্যাণকামীতার প্রতীক ছিলেন। তারা একদিকে যেমন ছিলেন বাতিলের আতঙ্ক, অন্যদিকে ছিলেন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গণমানুষের পরম বন্ধু। এইসব কল্যাণকামী মানুষের জন্যই উপমহাদেশ জুড়ে এখনো টিকে আছে-অনুসৃত মধ্যপথ-সিরাতে মুস্তাকীম; আর কুফরীর সমুদ্রে জেগে ওঠা একটুকরো ব-দ্বীপের এই তৌহীদী বাংলাদেশে আমরা স্থাপন করতে পেরেছি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নযীর।
উল্লেখ্য, নেছারাবাদী হুজুরের সমাপনী ভাষণ শেষে দেশ, জাতি ও উম্মাহর কল্যাণার্থে উপস্থিত লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়ে ৬টি প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উগ্র ও চরমপন্থা প্রতিরোধ, নিজ-নিজ স্বকীয়তা বজায় রেখে মতানৈক্যসহ ঐক্য নীতির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ইসলামী আদর্শের পরিপন্থি কাজ থেকে সরকারের বিরত থাকা, মহিলা মাদরাসার জন্য মহিলা শিক্ষিকা নিয়োগ এবং আসাম ও কাশ্মীরে সংঘটিত হামলা-নির্যাতনের নিন্দা উল্লেখযোগ্য। পরে দেশ-জাতি-উম্মাহর কল্যাণ ও অব্যাহত সাফল্য কমনা করে আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন হযরত নেছারাবাদী হুজুর।প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন