বিরল হলেও সত্য যে, কোনো কোনো শিশু জন্মের সময় অতি ক্ষুদ্রাকৃতির দাঁত নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। জন্মের সময় শিশু যে দাঁত নিয়ে জন্মায় সেটি ন্যাটাল দাঁত নামে পরিচিত। ন্যাটাল দাঁতকে ফিটাল দাঁতও বলা হয়। ন্যাটাল দাঁত নিওন্যাটাল দাঁতের চেয়ে আলাদা যা জন্মের ৩০ দিনের মধ্যে জন্মায়। জন্মগতভাবে একটি শিশু যখন দাঁত নিয়ে জন্মায় তখন পরিবারের সবাইতো বটেই আশপাশের সব মানুষের মধ্যে শিশুটিকে কেন্দ্র করে একটি অদম্য কৌতুহল জন্মায়। আলাপ-আলোচনা, সমালোচনা কোনো কিছুই বাদ যায় না। ন্যাটাল দাঁত দেখার জন্য সবার মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ন্যাটাল দাঁত বা ফিটাল দাঁত সাধারণত নিচের মাড়িতে উঠে থাকে যেখানে পরবর্তীতে নিচের সেন্ট্রাল ইনছিসর অর্থাৎ কর্তন দাঁত উঠে থাকে। ন্যাটাল দাঁতের গোড়ার গঠন খুবই ছোট হয়ে থাকে, যা নরম কোষের মাধ্যমে গাম বা মাড়ির সাথে সংযুক্ত থাকে। ন্যাটাল বা ফিটাল দাঁত নিয়ে বহু বছর যাবৎ কুসংস্কার বিদ্যমান। ন্যাটাল দাঁত সাধারণত একটি হয়, তবে একের অধিকও হতে পারে। ন্যাটাল দাঁতের গঠন তত শক্ত নয়। তবে ন্যাটাল দাঁতের কারণে জিহ্বায় ক্ষত দেখা দিতে পারে। দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য ন্যাটাল দাঁত খুবই অসুবিধার সৃষ্টি করে থাকে বিশেষ করে দুগ্ধদান করার সময়। জন্মের সময় শিশু হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে ন্যাটাল দাঁত ফেলে দেয়া উচিত, যদি ন্যাটাল দাঁতের অবস্থা নড়বড়ে থাকে। কারণ এ ধরনের ন্যাটাল দাঁতের কারণে শিশু দাঁতটি খেয়ে ফেলতে পারে আবার দাঁতটি শ্বাসনালিতে প্রবেশ করতে পারে। যদি রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে তাহলে ন্যাটাল দাঁত তখন তোলা যাবে না। ১০ দিন অতিবাহিত হলে ভিটামিন ‘কে’ ইনজেকশন প্রয়োগ করার পর দাঁত তুললে কোনো সমস্যা হবে না। ন্যাটাল দাঁত সাধারণত কোনো শারীরিক অবস্থার সাথে সংযুক্ত থাকে না। তবে কখনো কখনো ন্যাটাল দাঁত যেসব শারীরিক অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে সেগুলো হলো : (ক) এলিসভ্যান ক্লিভেন্ড সিনড্রোম (খ) হলারম্যান স্ট্রিফ সিনড্রোম (গ) পিয়ারি রবিন সিনড্রোম (ঘ) সটো সিনড্রোম। এছাড়া ন্যাটাল দাঁত, ঠোঁট কাটা এবং তালু কাটা শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে।
ষ ডাঃ মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল : ফৎ.ভধৎঁয়ঁ@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন