সীতাকুণ্ড উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর চৌধুরীঘাটা এলাকায় আব্দুল মালেক (৩০) নামক এক যুবককে মোবাইল চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল মালেক চাঁদপুর জেলার হবিগঞ্জ থানাধীন করাদী শিকদা পাটোয়ারী বাড়ির ছিদ্দিক পাটোয়ারীর পুত্র। বর্তমানে তারা সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বগুলা বাজার এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মালেক তার বাড়ি সীতাকুণ্ডের শীতলপুর বগুলা বাজার এলাকায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় চৌধুরীঘাটা এলাকার বাসিন্দা মো. আজমের নেতৃত্বে ১৪/১৫ জন যুবক মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে আব্দুল মালেককে বাড়ি থেকে ডেকে তুলে মারতে মারতে আধ কিলোমিটার দূরবর্তী চৌধুরীঘাটা আজমা ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানার ভেতরে নিয়ে আসে। এখানে তাকে পিছমোড়া শিকল দিয়ে হাত বেঁধে রাখা হয়। এসময় তার মা-বাবা ছিদ্দিক পাটোয়ারী ঘটনাস্থলে এসে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে আজম তাদের কাছে মোবাইল বাবদ ৪০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবী করেন। আব্দুল মালেকের বাবা ছিদ্দিক পাটোয়ারী প্রতিবেদককে বলেন, মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ঘুমন্ত ছেলেকে আজমের নেতৃত্বে ১৪/১৫জন লোক তুলে নিয়ে গিয়ে পিটাতে থাকে। আমরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে তারা ৪০ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা না দেওয়ায় তারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করেন। সকালে এ খবর জেনে আমরা পুলিশে খবর দিলে গতকাল (বুধবার) বেলা সাড়ে ১১টায় সীতাকুণ্ড থানার এস.আই কামাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল তৈরি শেষে পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। এসময় স্থানীয় জনতা হত্যাকারী সন্দেহে ৫জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তাৎক্ষনিকভাবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে মূল হোতা আজমসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে। এস.আই কামাল প্রতিবেদককে বলেন, আব্দুল মালেককে শীতলপুর চৌধুরীঘাটা এলাকায় কিছু লোক পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছি। তিনি বলেন, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে প্রকৃত ঘটনা কি ছিলো তা জানতে আমরা তদন্ত শুরু করেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা পালিয়ে গেছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল সকালে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত আজমকে খুঁজতে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। প্রকৃত ঘটনা বের করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন