দেশে কমপক্ষে ৩ কোটি লোক কোন না কোন ভাবে মূত্র তন্ত্রের জটিলতায় ভূগছে। এর মধ্যে ৫০ বছরের বেশি বয়সী লোকদের মাঝে ৪০ শতাংশ প্রোস্টেট বড় জনিত সমস্যায় আক্রান্ত। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা রেকারেন্ট ইউরিনারি ইনফেকশন। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৯৯তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৯ বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ইউরোলজিকাল সার্জন্স বাউস) আয়োজিত মূত্রতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক এক সভায় সোমবার (২৫ মার্চ) বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। রাজধানীর মিরপুর ৭ নং সেক্টরে এভিন্স গার্মেন্টস এর কর্মীদের মাঝে দিনব্যাপী মূত্রতন্ত্রের রোগের ফ্রি স্ক্রিনীং, চিকিৎসা ও পরামর্শ ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ কর্মসূচীর অংশ হিসাবে মূত্রতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধ সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, মূত্রতন্ত্র সংক্রান্ত রোগের মধ্যে প্রধান হচ্ছে-মূত্রতন্ত্রের পাথর যা মোট রোগীর ১০ থেকে ১২ শতাংশ। প্রোস্টেট ও কিডনি ক্যান্সার হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ এবং এ হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। দেশে বর্তমানে ইউরোলজিস্টের সংখ্যা মাত্র ২৭০ জন তাও আবার সদ্য পাশকৃত ডাক্তার সহ। দক্ষ এবং বিশেষজ্ঞ ইউরোলজিস্টের সংখ্যা মাত্র ১০০ জন।
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ইউরোলোজিকাল সাইন্স (বাউস) এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. কাজী রফিকুল আবেদীন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং কিডনী ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এর সিনিয়র কনসালটেন্ট ও ইউরোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. একেএম জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডা. রফিকুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশে হাসপাতালে বহি:বিভাগে শল্য বিভাগে আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৪০ ভাগ ইউরোলজিক্যাল সমস্যায় আক্রান্ত। এসব রোগী শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের নারী-পুরুষেরই হয়ে থাকে। ডা. রফিকুল আবেদীন ক্রমর্বধমান মূত্রতন্ত্রের রোগীর চাপ, এ রোগের জটিলতা এবং চিকিৎসা ব্যায়ের প্রেক্ষিতে দেশের প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজে দক্ষ জনবল প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি সমেদ পূর্ণাঙ্গ ইউরোলজি ইউনিট চালু করার দাবী জানান এবং বলেন এতে করেই মানুষকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা সম্ভব। মূল প্রবন্ধে ডা. জামানুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, মূত্রতন্ত্রের সকল রোগের চিকিৎসা আজ দেশেই সম্ভব, এসকল রোগ যথাসময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা গেলে জটিলতা ও প্রাণঘাতি অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, দির্ঘস্থায়ী কিডনি বিকলতার হাত থেকে ২০ ভাগ রোগী রক্ষা পেতে পারেন এবং প্রায় সম্পূর্ণ সাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন শুধুমাত্র সচেতন হয়ে সুস্থ্য লাইফ স্টাইল মেনে চলার মধ্য দিয়ে।
ডা. জামানুল ইসলাম মূত্রতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগের চিকিৎসা গ্রহণ, সাস্থ্য সম্মত খ্যাদ্যাভাস গঠন, পর্যাপ্ত পানি পান, প্রচুর শবজি খাওয়া, কম লবন খাওয়া, পরিমিত মাংস খাওয়া, ধুমপান পরিহার সহ নানান পরামর্শ প্রদান করেন।
দিনব্যাপী এ ফ্রি ইউলোজিক্যাল মেডিকেল ক্যাম্প এ প্রায় ৪ শতাধিক গার্মেন্টস শ্রমিক বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে গ্রহণ করে।
বাউস এর মহাসচিব প্রফেসর ডা. মো. শফিকুল আলম (শামীম), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজি এর পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. নুরুল হুদা লেলিন, প্রফেসর ডা. মেজর জেনারেল (অব.) এইচ আর হারুন, ঢাকা মেডিকেলের ইউরোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. মিজানুর রহমান, বিএসএমএমইউ’র ইউরোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. ইসতিয়াক আহম্মেদ এবং বিএসএমএমইউ’র ইউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. একেএম খুরশিদুল আলম, প্রফেসর ডা. মো. হাবিবুর রহমান (দুলাল) সহ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন