কুষ্টিয়ার মিরপুরে মুন্নি খাতুন (১৫) নামে ৯ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে জয়নালসহ (২০) ৫ বখাটের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের কাতলামারী গ্রামে তার চাচার বাড়ীতে আত্মহত্যা করে ঐ স্কুল শিক্ষার্থী। নিহত মুন্নি খাতুন এলাকার হেকমত আলী ভাষার মেয়ে এবং কেবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী।
নিহতের চাচা হাসেম আলী অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার আমার বড় ভাইর মেয়ের বিয়ে। এজন্য আমার সেজো ভাইর মেয়ে মুন্নি এবং আমার মেয়ে আমলা বাজারে ফুল কিনতে যায়। এ সময় আমলা বাজার থেকে এলাকার বখাটে জয়নাল প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে আমলা ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাকে আমলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই আশরাফ মুন্নিকে উদ্ধার করে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য রেজেলা খাতুনের কাছে হস্তান্তর করে এবং আমলা থেকে তার নিজ বাড়ী কাতলামারীতে আসার সময় পথিমধ্যে অটো গাড়ির গতিরোধ করে কাতলামারী এলাকার জয়নাল, মিঠুন, আঙ্গুর, রাজু এবং পারভেজ জোর করে মুন্নিকে পার্শ্ববর্তী ছাদিমনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। এর পরেই মুন্নি বাড়ীতে এসে আত্মহত্যা করে। হাসেম আলীর দাবী, জয়নাল ইতিপূর্বেও মুন্নিকে উত্যক্ত করতো। যা অনেকবার বাড়ীতেও বলেছে মুন্নি। সাদিমন জানান, দুপুরে একটি মেয়েকে জোর করে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে ৫জন ছেলে। তারা মেয়েটিকে গালিগালাজ করতে ছিলো। পরে মেয়ের বাড়ীর লোকজন এসে মেয়েটিকে নিয়ে যায়। আমলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই আশরাফ জানান, দুপুরে আমলা আলু ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারের সামনে থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছে হস্তান্তর করি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য রেজেলা খাতুন জানান, পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার কাছে হস্তান্তর করে। আমি তাকে নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে জয়নাল, মিঠুন, আঙ্গুর, রাজু, পারভেজসহ বেশ কয়েকজন মেয়েটিকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। এ সময় আমি মুন্নির বাবাকে ফোন দিয়ে জানালে মুন্নির পরিবারের লোকজন এসে মুন্নিকে নিয়ে যায়। পরে শুনতে পারি মুন্নি আত্মহত্যা করেছে। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আব্দুল হালিম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
নির্যাতন ও শ্লীলতাহানীর অপমান সইতে না পেরে লজ্জায় ক্ষোভে মুন্নি বাড়িতে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে বখাটেদের একজনের সাথে মুন্নির প্রেমের সম্পর্কও ছিল বলে জানা গেছে।
পুলিশ বলছে, আমরা সুরতহাল রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে কিছুই বলতে পারছিনা। তবে মুন্নির আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার সাথে যারা জড়িত তদন্ত পুর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন