ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম পর্যালোচনায় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত কমিটির কাছে কারচুপির প্রমাণ তুলে দিয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন জিএস পদে নির্বাচন করা রাশেদ খান। গত বৃহস্পতিবার চলতি মাসের ১১ তারিখ অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণসহ একটি চিঠি প্রক্টর অফিসে জমা দেন তিনি। তদন্ত কমিটি প্রমাণসহ চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আগামীকাল রোববার নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর মাহফুজুর রহমানের কক্ষে বিষয়টি নিয়ে তার সাথে কথা বলার সময় নির্ধারণ করেন।
কেন্দ্রীয় সংসদে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মো. রাশেদ খান বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বরাবর দেয়া চিঠিতে বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে ‘ডাকসু নির্বাচন-২০১৯ এ জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের প্রমাণ দাখিল এবং পুনর্নির্বাচনের আবেদন প্রসঙ্গে’। এতে বলা হয়েছে, গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি মো. রাশেদ খান, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ, ১৯তম ব্যাচ, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম। উক্ত পদে আমার নামে দেখানো ভোটের সংখ্যা ছয় হাজার ৬৩টি এবং একই পদে জয়ী ঘোষিত প্রার্থীর নামে দেখানো ভোটের সংখ্যা ১০ হাজার ৪৮৪টি। ডাকসু নির্বাচনে সংঘটিত হওয়া জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে দেশের সব খ্যাতনামা গণমাধ্যমে, যা ভোটের দিন আমি স্বচক্ষে দেখেছি এবং জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের প্রমাণগুলো এই আবেদনের সংযুক্তি অংশে ২০টি সংযুক্তি সংযুক্ত করেছি। আমি মনে করি, এসব জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
চিঠিতে বলা হয়, আমার দাখিলকৃত প্রমাণসমূহের সাপেক্ষে, আমার পদের সব ভোট সাংবাদিকদের সামনে পুনর্গণনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই ডাকসু নির্বাচন ২০১৯-এর পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও ছাত্রসমাজের দাবিকে আমলে নিয়ে ডাকসু নির্বাচনের ফলকে বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ডাকসু নির্বাচনের জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রদানের শেষ দিনে ২০টি সংযুক্তি আকারে তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ জমা দিয়েছি। এরপর তদন্ত কমিটি থেকে বিকালে কল করে এসব বিষয়ে কথা বলতে আগামী রোববার দুপুর ১২টায় সময় নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে নির্বাচনের অনিয়ম পর্যালোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত প্রফেসর সাজেদা বানুকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে প্রশাসন। সদস্য সচিব করা হয়েছে সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর মো. ইমদাদুল হক, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রভোস্ট মো. মহিউদ্দিন, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর শফিক উজ জামান, সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর শারমিন রুমি আলীম। কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের বাইরে আর কারো কাছে অন্য কোনো তথ্যপ্রমাণ থাকলে তা লিখিত আকারে তুলে দিতে শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান জানানো হয়। বৃহস্পতিবার তথ্যপ্রমাণ দাখিলের শেষ দিনে চিঠি পাঠান রাশেদ খান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন