স্টাফ রিপোর্টার : সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিকে প্লাস্টিক পলিথিন দিয়ে আটকিয়ে রোগ ও পোকা-মাকড় দমন করে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি ফসল উৎপাদনে বিশেষ সফলতা অর্জন করেছেন রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত¡ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মু. সোলায়মান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহায়তায় সম্প্রতি তিনি এ গবেষণার কাজটি বাংলাদেশের মাটিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত¡ খামারে এবং জাপানের ইয়ামাগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে যৌথভাবে সম্পন্ন করেন এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ করেন। ড. সোলায়মানের গবেষণার বিষয় ছিল ‘সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মিকে আংশিক আটকিয়ে বাংলাদেশের সবজি ফসলের রোগ ও পোকা-মাকড় দমন।’
এ গবেষণা কাজের জন্য তিনি উন্মুক্ত মাঠে ছোট ছোট মিনি হাউজ এবং টানেল তৈরী করেন যা গ্রীন হাউজের সাশ্রয়ী সংস্করণ এবং তার অভ্যন্তরে প্রাকৃতিক সূর্যরশ্মির অতিবেগুনী রশ্মি আটকিয়ে রঙিন ও দেশী সবজী চাষ করেন। উন্নত দেশে গ্রীন হাউজে অতিবেগুনী রশ্মি সম্পূর্নভাবে আটকিয়ে সবজীর খুব ভালো ফল পেলেও রঙিন ফসলের কিছু উপকারী উপাদান এর উৎপাদন কমে যেত। তাই অতিবেগুনী রশ্মি সম্পূর্ণভাবে না আটকিয়ে বিশেষ প্লাষ্টিক পলিথিনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওয়েভলেংথে আটকিয়ে তিনি সবজির ভাল ফলন পান এবং তাতে উপস্থিত উপকারী রঙিন উপাদানও বজায় রাখতে সক্ষম হন। এছাড়াও তাতে রোগের আক্রমনও অনেকাংশে কমানো যায় বলে তিনি জানান। এ পদ্ধতি অবলম্বন করে সবজি চাষ করলে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ৮০% পর্যন্ত কমানো সম্ভব বলে তিনি তার গবেষণায় দেখিয়েছেন।
বেশ কিছু পরিবেশ বিষয়ক ও নগর কৃষিভিত্তিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত এ গবেষক বর্তমানে নিরাপদ সবজী উৎপাদনের নানা কৌশল ও উপায় সম্পর্কে ঢাকার আশ-পাশের জেলা সমূহের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এছাড়া ড. সোলায়মান গত ১০ বছর ধরে দেশীয় বিভিন্ন ওষুধী গাছের নির্যাস দিয়ে পোকামাকড় দমন নিয়ে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে আসছেন। ভবিষ্যতে তিনি নিরাপদ সবজি উৎপাদনের গবেষণায় ব্যবহৃত বিশেষ পলিথিনকে কিভাবে আরো সাশ্রয়ী করা যায় এবং আঠালো রঙিন ট্র্যাপের (পোকা দমনে বিশেষ ধরনের ফাঁদ) ব্যবহার আরো কত সহজে বাড়ানো যায় তা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন