পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বিলুপ্তপ্রায় সকল বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে বর্তমান সরকার সব সময়ই সচেষ্ট। এই প্রাণিগুলোর মধ্যে শকুন অন্যতম। শকুন সংরক্ষণে সরকার দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশের সাথে একযোগে কাজ করছে।
গতকাল রাজধানীর সোনারগঁওা হোটেলে শকুন সংরক্ষণে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার শকুন সংরক্ষণে ইতোমধ্যে অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শকুন সংরক্ষণের সকল আন্তর্জাতিক উদ্যোগ বাংলাদেশ সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করেছে। শকুনের জন্য ক্ষতিকারক ওষুধ ডাইক্লোফেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২০১০ সালে। বাংলাদেশ বন বিভাগ শকুন সংরক্ষণে সিলেট ও সুন্দরবন এলাকায় দু’টি নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করেছে। শকুন সংরক্ষণে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শকুন পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করা হয়েছে ২০১৩ সালে। একই সাথে গঠন করা হয়েছে শকুন সংরক্ষণে দীর্ঘমেয়াদী অ্যাকশন প্ল্যান, যা বাংলাদেশে শকুন সংরক্ষণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে শকুনের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক উদ্যোগসমূহের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাইস গ্রিন। তিনি বলেন, ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ বন্ধ করার পর ওই জাতীয় আরো ওষুধ ইতোমধ্যে বাজারে এসেছে। এসব বিপণন ও পরিবহন বন্ধ করা প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, সরকার আন্তরিকভাবে বন বিভাগের মাধ্যমে শকুন সংরক্ষণে সকল উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। পশুর শরীরে প্রয়োগকৃত যেসব ওষুধ শকুনের জন্য ক্ষতিকারক সেগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অসুস্থ শকুনকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার কাজ একই সাথে বন বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অপরদিকে পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বলেন, আজকে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক স্টিয়ারিং কমিটির এই সভার মাধ্যমে এ অঞ্চলের শকুন সংরক্ষণে এক অভাবনীয় লক্ষ্য অর্জনে সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। আজকের এই সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও কম্বোডিয়া থেকে আগত সকল সরকারি প্রতিনিধি ও বিজ্ঞানীগণকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য উপকারি প্রাণী শকুন রক্ষায় একটি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো: বিল্লাল হোসেন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ শফিউল আলম চৌধুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইইউসিএন-এর উপ-আঞ্চলিক পরিচালক ড. তেজপা সিং।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন