হেরেছেন রাজনীতিতে, ব্যক্তি স্বার্থে জিতেছেন সিলেট-২ আসনের এমপি পদে আলোচিত মোকাব্বির খান। নানা নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনা নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিয়তা দেখা দিলে, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়ে উঠে মোকাব্বির খানের।
কিন্তু দলের নির্দেশনা অবজ্ঞা করে শপথের ঘটনায় মীর জাফরের তকমা তুলছেন সমর্থক ভোটাররা। স্বার্থপরতার উর্ধ্বে রাজনীতির মহান নীতি আর্দশকে লালনের চির সত্য পাঠ ম্লান করে দিয়েছেন মোকাব্বির খান। রাজনীতির পর্দায় তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করলেও, সেই রাজনীতিকে ঠেলে দিয়ে নিজের ব্যক্তি স্বার্থের খায়েশে পরাজিত মোকাব্বির খান এখন আলোচিত সমালোচিত এক কথিত রাজনীতিক। বিজয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন তিনি। মন্ত্র-তন্ত্র হিসেবের বাইরে রেখে ব্যক্তি মোকাব্বির নিজের আখের গোছাতে সংসদে বসার শেষ মহড়ায় চরম আত্ম-কেন্দ্রিকতার পরিচয় দেন। সেই সাথে গ্রহণযোগ্যতা, ভোটারদের সমর্থনের কবর রচনা করে, এমপি পদের অলঙ্কারে মোহগ্রস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বিজয়ী হ্ওয়ার পর থেকেই তার অবস্থান স্থানীয়ভাবে সর্বাধিক আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেন। ঐক্যফ্রন্টের হয়ে সংসদে শপথ নিচ্ছেন বা নিবেন তা নিয়ে চলে সমাধানহীন আলোচনা। দলের দিক নির্দেশনার প্রতি তার ত্যাগ বা আনুগত্যের কঠিন পরীক্ষায় পড়েন তিনি। একদিনে জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান-সুনাম, অপরদিকে দলও ভোটারদের প্রত্যাশাকে জলাঞ্জলি দিয়ে শপথ বিষয়টিতে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক ধূম্রজালে পড়ে।
এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেয়ায় সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানকে বেইমান বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। গত মঙ্গলবার দুপুরে একাদশ সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেন গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত ছিল ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে নির্বাচিত কেউ শপথ নেবেন না। এ বিষয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘মোকাব্বির বেইমান। তাকে কেউ চিনত না। তার কোনো ভোট নেই। সে আমার বাসায় এসে বলেছিল সে ইমানদার। আমাদের সমর্থন নিয়েই সে এমপি হয়েছে। তার যোগ্যতা থাকলে সে যেন আবার প্রার্থী হয়।
অপরদিকে, মোকাব্বির খানের শপথ গ্রহণে বিব্রত সিলেট বিএনপির নেতারা। এমন ঘটনা রাজনীতিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য তাদের। ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আসকির আলী সংসদ সদস্য হিসেবে মোকাব্বির খানের শপথ গ্রহণ সম্পর্কে বলেন, আমি বাকরুদ্ধ, নির্বাক। এই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমাদের সমাজে বিবেক ও মানবতা বড় অসহায়।
বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া বলেন, আমরা বিব্রত। অতীতে কখনো এ ধরনের রাজনীতির মুখোমুখি আমরা হইনি। এখন দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেদিকেই আমরা আছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন