মাদার নদী পদ্মা থেকে উৎসারিত পাবনার বড়াল ও ইছামতি নদী দখল উচ্ছেদে কমিশনের নির্দেশনা পাওয়া গেলে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন, পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন। প্রয়োজনে সেনা বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হবে।
সূত্র মতে, আর্ন্তজাতিক গঙ্গা নদী প্রবাহ থেকে আসা পদ্মা নদী ভারতের ফারাক্কার করাল থাবায় ক্রমেই নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণের জেলা সমূহের প্রায় ৫৪টি নদ-নদী এখন মৃত প্রায়। অপরদিকে,
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত স্লুইস গেটের কারণে বিশেষ করে পাবনার ইছামতি ও বড়াল নদী শুকিয়ে গেছে। অপরিকল্পতি স্লইস গেট নির্মাণ এই কথার মানতে নারাজ পাউবো’র কর্মকর্তারা। তারা বলছেন,
স্লুইস গেট না থাকলে বন্যার সময় বিস্তৃত অঞ্চলে পানি প্রবেশ করে ফসলের মাঠ-ঘাট তলিয়ে যেতো।
ভাগরথি নদীর মাধ্যমে ভারত গঙ্গার পানি ঘুরিয়ে নেওয়া কালক্রমে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে দেশের নদ-নদী। পদ্মা নদী শুষ্ক মওসুমে ধূ ধূ বালু চরে পরিনত হয়। দীর্ঘ বছরে বালি ও পলি জমে নদীর মুল প্রস্থতা কমে গিয়ে সেই স্থান স্থায়ী মৃত্তিকায় রূপান্তরিত হয়ে গেছে। পদ্মাায় পানির টান পড়ায় প্রধান শাখা নদী গড়াই, আত্রাই এবং অপর শাখা নদী
বড়াল ও পাবনার ইছামতিতে পানির টান পড়ে। পাবনা শহরের বৃটিশ-ভারতে যে স্থানে বড় বড় স্টিমার ভিড়তো, চলাচল করতো গয়নার পন্যবাহী নৌকা সেই খেয়াঘাট , রূপকথা পার হয়ে বর্তমানে যেখানে ব্রিজ হয়েছে সেই সব স্থান গুলো ভারাট হয়ে গেছে।
ইছামতি নদী ও বড়াল শুকিয়ে যাওয়ায় নদীদস্যুদের কপাল খুলেছে। দিনে দিনে দখল করে নিয়েছে নদীর অনেক স্থান। গড়ে তোলা হয়েছে নানা স্থাপনা। এই কাজ দখলকারীরা একা করেনি, সহায়তা করেছে, ভূমি অফিসের অসাধু লোকজন।
পাবনার ইছামতি নদীর ঐতিহ্য রয়েছে, এই পথে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ গেছেন, বৃহত্তর পাবনা জেলার শাহজাদপুরের কাছারি বাড়িতে। চাটমোহরে এসেছেন, জমিদারী দেখতে সাহিত্যিক প্রমথ নাথ চৌধুরী। তাঁর এক গ্রন্থে তিনি উল্লেখ করেছেন,
‘জমিদারী দেখা শোনা করতে নৌ-পথে আসা যাওয়া করতাম। একবার বিশেষ প্রয়োজনে স্থলে পথে আসতে হয়।
চাটমোহরে রেল স্টেশনে নেমে দেখি আমাকে নেওয়ার জন্য পাল্কী বেহারা দাঁড়িয়ে আছে। তাদরে জীর্ণ দেহ। ভাবলাম পাল্কী চড়ে যাবো না, যখন শুনলাম এখান থেকে বারো ক্রোশ পথ হেঁটে যেতে হবে, তখন পাল্কীতে উঠলাম। পাল্কীতে চড়ে আমার মনে হলো,
আমরা ধণী লোকেরা মানুষের স্কন্ধে চড়েই তো জীবন নির্বাহ করছি, মানুষের স্কন্ধে চড়ায় কোন পাপ নেই ,ইহাই তো পলিটিক্যাল ইকোনমিক্স-এর শেষ কথা।’
পাবনা ইছামতি ও বড়াল নদী দখলে চলে গেছে। মানুষ জাগছে,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী দখল-দূষণ রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন, তুরাগ নদী পাড় দখল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীতেও কার্যক্রম চলছে।
কমিশনারের নিদের্শনা পাওয়া মাত্র পাবনার জেলা প্রশাসন দখল উচ্ছেদে নামবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন