ভূ-গর্ভস্থ পানির আধার আর করোনা শেষ -ভূপরিস্থ পানিতেই বাঁচবে বাংলাদেশ। এই লক্ষকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি নির্মান করছে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী পরিচালিত নারায়নগঞ্জ ডক ইয়ার্ড লিমিটেড প্রকল্পটির কাজ করছে। সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামো নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে শস্য উৎপাদন ও মৎস্য চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামোটির নির্মান কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। যার মাধ্যমে খরা মৌসুমে পানি সংরক্ষন করে সেচ হিসাবে ব্যবহার করা হবে। স্লুইস গেটের আদলে নির্মিত হওয়ায় উপরিভাগের ব্রীজ দিয়ে সদর ও বিরল উপজেলার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতী হবে। প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দৈনিক ইনকিলাব-কে জানান, সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামোটি বাস্তবায়িত হলে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল সংক্ষেপে এসডিজি’র অন্তত ৮টি সূচক অর্জিত হবে। খরা মৌসুমে জেলার দক্ষিনাংশে খাওয়ার পানি সংকট দূর হবে।
গত বিশ বছরে দিনাজপুর জেলায় নির্মানাধীন সর্ববৃহৎ সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামোটি বাস্তবায়িত হলে ফসল ও মৎস্য চাষে বৈল্পবিক পরিবর্তন আসবে। দিনাজপুর -৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামো সংলগ্ন এলাকায় কৃষি ও মৎস চাষে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। ফসল ও মৎস্য চাষের উন্নতি’র পাশাপাশি সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
দিনাজপুর জেলা সদরের গৌরীপুর নামক স্থানে খরা মৌসুমে সম্পুরক সেচ প্রদানের লক্ষ্যে সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর অধীনে নির্মানাধীন সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামো’র কাজ তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। প্রকল্পের আওতায় যে সকল নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হবে তা হলো চার ভেল্ট রেগুলেটর বা ৬ মিটার থেকে ৬ দশমিক ৫০ মিটারের স্লুইস গেট, ৯২ মিটার ইউয়্যার ও ৫০০ মিটার সংযোগ সড়ক। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যায় ধরা হয়েছে ৫১১১ দশমিক ২৮ লক্ষ টাকা।
সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রন কাঠামোটি নির্মান সম্পন্ন হলে দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলার প্রায় ৩৬’শ হেক্টও জমিকে চাষের আওতায় এনে শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি। ভূগর্ভস্থ পানি লেবেলের উচ্চতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প সংলগ্ন হাজার হাজার পরিবারের পানের পানি সংকট দূর করা ও আর্সেনিকের আবির্ভাব প্রতিহত করা। দুটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নদী ও শাখা খালে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ বৃদ্ধি করা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসডিজি’র-১,২,৩,৪,৬,১২,১৩ ও ১৫ নম্বর সূচকগুলি অর্জিত হবে। যার মধ্যে রয়েছে সর্বত্র সব ধরনের দারিদ্রের অবসান, ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষির প্রসার। সকল বয়সী সকল মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যান নিশ্চিতকরণ, সকলের জন্য অন্তভূক্তিমূলক ও সমতভিত্তিক গুনগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি। সকলের জন্য পানি ও পয়ঃনিস্কাশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। পরিমিত ভোগ ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করা। জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব মোকাবেলায় জরুরী কর্মব্যবস্থা গ্রহন এবং স্থলজ বাস্ততন্ত্রেও পুররুদ্ধার ও সুরক্ষা প্রদান এবং টেকসই ব্যবহারে পৃষ্ঠপোষণা, টেকসই বন ব্যবস্থাপনা, মরুকরণ, প্রক্রিয়ার মোকাবেলা, ভূমির অবক্ষয় রোধ ভূমি সৃষ্টির প্রক্রিয়ার পুনরুজ্জীবন এবং জীববেচিত্র্য হ্রাস প্রতিরোধ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন