শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামী জামিনে

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ৬:৩৯ পিএম

কাশীপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার একমাত্র আসামী আবু সাঈদের জামিন পেয়েছেন। ৪ এপ্রিল উচ্চ আদালতের জামিন আদেশে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে সে।
এদিকে অভিযুক্তের জামিনের এ ঘটনাটি জানাজানি হলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পরিবার শঙ্কা প্রকাশ করছে ন্যায় বিচার নিয়ে। তবে, আসামীর জামিন ন্যায় বিচারকে ব্যাহত করতে পারবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন মামলাটির তদন্তকারী সিআইডির কর্মকর্তা।
চাঞ্চল্যকর মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার একমাত্র আসামী আবু সাঈদকে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত জামিন প্রদান করেছেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের এ আদেশ ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল আদালতে এসে পৌঁছালে এদিনই সে জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন।
স্কুল ছাত্রী মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনার ৮ মাস পর গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সাহায্যে আবু সাঈদকে গ্রেফতার করে দুবাই পুলিশ। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালের দিকে দুবাই থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছার পর তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
এদিকে উচ্চ আদালত থেকে মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার একমাত্র আসামী আবু সাঈদ জামিনে মুক্ত হয়ে মামলার বাদী ও নিহতের পিতা শাহিন বেপারীকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলার বাদী ও মোনালিসার পিতা শাহিন বেপারী কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, জামিন পাওয়ার আগের থেকেই আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। সম্প্রতি জামিনে বের হয়ে এসে এই হুমকির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আমি আমার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে তাদের ভয়ে গ্রামের বাড়িতে এসে থাকছি।
শাহিন বেপারী আরও বলেন, আমার ছোট্ট একটা মেয়েকে সে (আবু সাঈদ) ওভাবে হত্যা করলো। অথচ সে তার যদি জামিন হয় তা দুঃখজনক। আমার মেয়ে হত্যার বিচার আমি পাবো কিনা সে নিয়ে এখন সন্দিহান।
এদিকে স্কুল ছাত্রী মোনালিসা ধর্ষণ ও হত্যা মামলটি এখন তদন্ত করছেন নারায়ণগঞ্জ সিআইডির পরিদর্শক প্রদীপ কুমার সরকার। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খুব শিগগিরই এই মামলার চার্জশিট দাখিল করবো। কেউ একজন জামিন পেতেই পারে। এতে ন্যায় বিচার ব্যাহত হতে পারে না। তাছাড়া সে পালিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কাও সঠিক নয়। কেননা, তার পাসপোর্ট জব্দ করা আছে।
আবু সাঈদ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ বাংলাবাজার এলাকার ইকবাল হোসাইনের ছেলে। মোনালিসা একই এলাকার শাহিন বেপারীর মেয়ে এবং বাংলাবাজার হাজি উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দেওভোগ বাংলাবাজার এলাকার নিজ বাড়িতে ধর্ষণের পর খুন হয় মোনালিসা। অভিযোগ, মোনালিসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় সাঈদ। সাঈদকে দেখতে পান বাড়ির ভাড়াটিয়া রবতন বেগম। আবু সাঈদ বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি মোনালিসাদের ঘরের জালানা দিয়ে দেখতে পান মোনালিসার দেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে।
ঘটনার দিন মোনালিসার বাবা শাহিন বেপারী ও মা মরিয়ম বেগম নরসিংদী গিয়েছিলেন। নরসিংদী থাকতেই শাহিন বেপারী জানতে পারেন মেয়ের মৃত্যুর খবর। ঘটনার রাতেই আবু সাঈদ দুবাই পালিয়ে যায়।
আবু সাঈদ আগে থেকেই দুবাইয়ে থাকতেন। ঘটনার তিন মাস আগে দেশে ফিরে এসে মোনালিসাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় বিয়েতে মত দেননি শাহিন বেপারী। পরে সাঈদকে অন্যত্র বিয়ে করায় তার পরিবার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Gazi Mohammad Shawkat Ali ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:০৬ এএম says : 0
ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামী কোন আইনে ২০২০ সাল পর্যন্ত জামিন পায় ?
Total Reply(0)
Md. Al Amin ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:০০ এএম says : 0
ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামীর এত দীর্ঘ সময়ের জন্য জামিন পাওয়াটা কি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং আদালতের ভূমিকাকে কি প্রশ্নবিদ্ধ করে না?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন