কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামের রাজীবপুর-রৌমারী সড়কে শিবেরডাঙ্গী বাজারে ব্যবসায়ীর ২০০ প্যাকেট জিরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ। ঘটনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আকবর হোসেন ওই ঘটনার বিচার চেয়ে থানা পুলিশ ও আ’লীগ নেতাদের কাছে ধরণা দিয়েও কোনো ফল পায়নি। ঘটনার ৬দিন পর সোমবার রাজীবপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী আকবর হোসেন।
অভিযোগে জানা যায়, ব্যবসায়ী আকবর হোসেন গত বুধবার (১৮ মে) বর্ডার হাট থেকে ২০০ প্যাকেট (প্রতি প্যাকেট ১ কেজি) ভারতীয় জিরা ক্রয় করেন। যার মূল্য প্রায় ১ লাখ টাকা। জিরার প্যাকেটগুলি রৌমারীর কর্তিমারী বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রকাশ্যেই ছিনতাই করে নেয় শামসুল আলম নামে এক আ’লীগ নেতা। ছিনতাইকারী শামসুল আলম সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি।
সীমান্ত হাট সংলগ্ন জালছিরা পাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আকবর হোসেন আরো বলেন, ‘ছিনতাইয়ের পর অভিযোগ নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলমের কাছে বিচার চেয়েও প্রতিকার পাইনি। উল্টা আমাকে বলেন তোরা আমাকে ভোট দিসনি, তাই কিছু করতে পারব না। পরে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি সাহেব বলেন যেহেতু সরকারি দলের নেতার বিরুদ্ধে তাই আগে নেতাদের কাছে যান। ওই টাকাই আমার একমাত্র পুঁজি ছিল । পুঁজি হারিয়ে আমার ব্যবসা বন্ধ। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
এ বিষয়ে রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল বলেন, ‘প্রকাশ্যে এত বড় একটা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল আর পুলিশ মামলা নিল না। কেননা ওই ছিনতাইকরা জিরার অর্ধেক প্যাকেট আ’লীগের এক নেতার বাড়িতে গেছে। তাই কেউ কিছুই বলে না। পুলিশও নিরব।’
শিবেরডাঙ্গী বাজারের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছিনতাই করার ঘটনা তো অনেকেই দেখেছে। তারা আ’লীগের লোক হওয়ার কারণে কেউ এগিয়ে যায়নি। এক দোকানি বলেন, ‘আমরা কিছু বলিনি ভয়ে। যদি তারা আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শামসুল আলম ছিনতাইয়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, একজনের কাছে এতগুলো ভারতীয় জিরার প্যাকেট এলো কি করে। বর্ডার হাটে তো একজনে ২০০ প্যাকেট কেনার কোনো নিয়ম নেই। সেটা খোঁজেন আপনরা।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম বলেন, জিরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তি আমার কাছে এসেছিল এটা সত্য। আমি তো তাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।
রাজীবপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) প্রীতৃশ কুমার জানান, পুলিশ মামলা নেয়নি এ অভিযোগ সত্য নয়। বরং ওই ধরণের কোনো অভিযোগ নিয়ে থানায় কেউ আসেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন