শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ইতিহাস সংরক্ষণে দেশ ভ্রমণে এলিজা

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে পড়তে গিয়ে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার ইতিহাস ঐতিহ্য সর্ম্পকে জানার মধ্যদিয়েই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রত্তমতাত্তি¡ক নিদর্শন নিয়ে কাজ করার প্রবল আগ্রহ তৈরি হয় বঙ্গ ললনা ভ্রমণ পিপাসু এলিজা বিনতে এলাহীর।
বাংলাদেশের প্রত্মতাত্তি¡ক পর্যটনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন এ বাংলাদেশি বিশ্ব পর্যটক। তিনি এ পর্যন্ত দেশের সাতটি বিভাগের ৪৫তম জেলা হিসেবে অবস্থান করছেন সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লায়।
ভ্রমণকন্যা ও লেখক এলিজা ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে হেরিটেজ ট্যুর শুরু করেন। ওই বছরের মে মাসে ঢাকার বলদা গার্ডেন দিয়ে তিনি ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহের ভ্রমণ শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ঢাকা বিভাগ হয়ে ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী বিভাগের ৪৩টি জেলা ভ্রমণ শেষে গত ১৪ এপ্রিল নববর্ষের প্রথমদিন পা রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগের প্রথম জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এমনিভাবে বাংলাদেশের ৪৪টি জেলার প্রত্মতাত্তি¡ক স্থাপনাগুলো প্রাথমিকভাবে ভ্রমণ ও তথ্য সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন করে সোমবার থেকে ভ্রমণ তালিকার ৪৫তম জেলা কুমিল্লা ঘুরছেন। ঘুরে দেখার পাশাপাশি লিখিত তথ্য, লোককথা, স্থিরচিত্র ও ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এ ভ্রমণের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা দর্পণের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন ভ্রমণ কন্যা এলিজা বিনতে এলাহী। সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন দর্পনের চেয়ারম্যান মাহাবুব মোর্শেদ।
ভ্রমণ কন্যা এলিজা বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ বছরে এশিয়া ও ইউরোপের ৪৬টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। এসব দেশের বিভিন্ন স্থাপনা দেখেছেন, জেনেছেন ইতিহাস আর মিশেছেন বিভিন্ন জনগোষ্ঠির সঙ্গে। তার চোখে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পে ও প্রত্মতাত্তি¡ক দিক থেকে এক অপার সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু পর্যটন বিকাশে অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার অনেক কাজ করলেও পর্যটক আকর্ষণে ও দেশিয় ঐতিহ্যগত প্রত্মতাত্তি¡ক স্থাপনা রক্ষায় অনেকটাই পিছিয়ে। কীভাবে ওইসব ঐতিহাসিক ও আদি স্থাপনাগুলো রক্ষা করতে হয়, তারও প্রায়োগিক জ্ঞানের ঘাটতি আছে। বাংলাদেশের প্রত্মতাত্তি¡ক ঐতিহ্যগুলো রক্ষা এবং এসব ঘিরে অনেক জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো নয়, তা উন্নত করতে হবে।
কুমিল্লা প্রসঙ্গে এলিজা বলেন, কুমিল্লার ইতিহাস ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা, বরেণ্য ব্যক্তি, নিদর্শন, আর এখানকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আমাদের হেরিটেজের অংশ। ভ্রমণ কন্যা এলিজা তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, তিনি নিজ উদ্যোগে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করছেন। সব জেলার প্রত্মতাত্তি¡ক স্থাপনা সরেজমিনে দেখবো এবং সেগুলো নিয়ে দেশের প্রতিটি বিভাগ এবং সম্ভব হলে জেলাভিত্তিক বই ও স্থিরচিত্র দিয়ে তথ্যবহুল ছবির অ্যালবাম প্রকাশ এবং টেলিভিশন, ইন্টারনেটে ভিডিও ডকুমেন্টারি ও ট্র্যাভেল শো করার ইচ্ছে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এলিজা ঢাকার ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক। অধ্যাপনা থেকে শিক্ষাছুটিতে বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের হেগ ইউনিভার্সিটি অব এপ্লায়েড সায়েন্স থেকে ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনে পড়াশোনা করছেন। তার গবেষণার বিষয়-‘বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে হেরিটেজ ট্যুরিজমের গুরুত্ব’। কোয়েস্ট (অ্যা হেরিটেজ জার্নি ফর ডেভলপমেন্ট) নামের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের স্থাপত্যকর্ম, নিদর্শনগুলো পরিদর্শন করছেন এবং তা তুলে ধরছেন বিশ্ব পরিমন্ডলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন