বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে ঘুষের চাহিদা ছিলো ১০/১৫ হাজার টাকা। মতিন মিয়া সেই সময় চার হাজার টাকা দিয়েও ছিলেন। কিন্তু বাকি টাকা পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ জোটেনি তার কপালে। তবে বিদ্যুৎ না পেলেও বকেয়া বিলের মামলায় দিনমজুর মতিনকে ঠিকই যেতে হলো কারাগারে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, আব্দুল মতিনকে (৪৫) গ্রেফতার করে কুমিল্লা জেলহাজতে প্রেরণ করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের গ্রাহক ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা।
জানা যায়, গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বিদ্যুৎহীন ২৫৬টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চার বছর আগে আবেদন করে। পরে দালাল আবুল কালাম আজাদ ও আবুল বাশার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার প্রতি ১০/১৫ হাজার টাকা আদায় করেন। ওই সময় মৃত অহিদ আলীর ছেলে আব্দুল মতিন মিয়াও আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ সংযোগের অনুমোদন দেয়। কিন্তু মতিন মিয়া দালালদের চার হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে না পারায় বিদ্যুৎ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অর্থের বিনিময়ে মতিন মিয়ার আবেদনে একই এলাকার মৃত আব্দুস ছামাদের ছেলে সফিকুল ইসলামের ছবি লাগিয়ে দেয়। পরে মতিন মিয়ার নামে মিটারের মাধ্যমে গত ২০১৫ সালের ২২ মার্চ সফিকুল ইসলামকে সংযোগ প্রদান করে। সফিকুল প্রায় ১৭ মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখে। পরে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চান্দিনা অফিসের এজিএম লক্ষন চন্দ্র পাল বাদী হয়ে বকেয়া বিল ৪ হাজার ৭ টাকা অদায়ের জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর থানার এসআই কবির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আব্দুল মতিনকে আটক করে গতকাল বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ওসি একেএম মনজুর আলম বলেন, একটি মামলায় মতিন মিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হাবিবুর রহমান আবেদন ফাইলে ছবি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আব্দুল মতিনের নামের মিটার সফিকুল ইসলাম ব্যবহারের বিষয়টি জানা নেই। মামলা হওয়ার পূর্বে মতিন মিয়া নোটিশ পেয়ে যোগাযোগ করতেন তা হলে এ ঘটনাটি ঘটতো না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন