বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের সড়কসমূহে হর্ন ও সাইরেনবাজির কারণে হৃদরোগসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, শব্দ দূষণের ফলে বাচ্চাসহ সব বয়সের মানুষের ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি লোপ পাচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের সামনের সড়কসমূহে ব্যাপক সাইরেনের কারণে শব্দ দূষণ হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের শ্রবণসীমা পেরিয়ে অস্থিরতায় ভুগছে। পাঠে অমনোযোগী হচ্ছে। অতিমাত্রায় শব্দ দূষণের ফলে গর্ভবতী মহিলাদের জন্মগত ত্রুটি, উচ্চ রক্তচাপ, বুক ধরফড়, অনিদ্রা, কানে ঝি ঝি, মাথা ব্যথাসহ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। দীর্ঘদিন একই অবস্থায় থাকতে থাকতে মানসিক রোগেরও জন্ম হতে পারে। চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের জরিপে দেখা যায়, যেখানে সড়কে শব্দ দূষণের পরিমাণ ৬০ ডেসিবেল থাকার কথা সেখানে দূষণের পরিমাণ ১১০ থেকে ২০০ ডেসিবেল পর্যন্ত পাওয়া গেছে। হাসপাতাল এলাকাকে নীরব এলাকা হিসেবে ধরা হলেও নগরীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের আশেপাশের সড়কগুলোতে ব্যাপকভাবে শব্দ দূষণ হচ্ছে। এর ফলে ভর্তিকৃত রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গাড়ি চালকদের একটা বিশ্বাস ক্রমাগত বাড়ছে যে, যানজট যত বেশি হর্ন তত জোরে বাজালে সামনে থেমে থাকা গাড়ি চলতে থাকবে। আগে সাইরেন থাকতো শুধু অ্যাম্বুলেন্সে এবং অতি প্রয়োজনীয় ও জরুরী কাজে নিয়োজিত বিশেষ কিছু সরকারি গাড়িতে। কিন্তু এসব জরুরী কাজে নিয়োজিত গাড়ির সাইরেনে মানুষের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে চলাচলরত গাড়ির সাইরেনে ব্যাপক শব্দ দূষণের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন