রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) নামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পাশের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ওই ছাত্রী রাইড শেয়ারিং কোম্পানির অ্যাপস ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেপরোয়া একটি কাভার্ড ভ্যান এই ছাত্রীকে চাপা দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহত লাবণ্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহে। তিনি পরিবারের সঙ্গে শ্যামলীর ৩ নম্বর সড়কে থাকতেন। তার বাবার নাম এমদাদুল হক।
এদিকে, লাবণ্যের নিহতের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা ঘাতক কাভার্ড ভ্যান চালক ও উবার রাইডারের বিচারের দাবিতে ¯েøাগান দেন।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বাসা শ্যামলী এলাকায়। সেখান থেকে রাইড শেয়ারিং অ্যাপস ‘উবার মোটো’যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে হাসপাতালের পাশের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিশ্চিতভাবে দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি। তবে বেপরোয়া একটি কাভার্ডভ্যান ওই ছাত্রীকে চাপা দিয়েছে বলে শোনা গেছে। আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।
ওসি আরও বলেন, দুর্ঘটনায় উবার চালকও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ট্র্যাক করে জানা গেছেÑ ওই রাইডারের নাম সুমন। তিনি আদাবর এলাকায় থাকেন। পুলিশ আসার আগেই তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন। এমনকি রাইডার তার প্রেসক্রিপশনটিও না নিয়ে হাসপাতালে রেখে গেছেন। তাকে কল করা হলে মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে শেরেবাংলা নগর থানার এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটলো সেটি কেউই বলতে পারছে না। আশপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। তবে কয়েকজন একটি দ্রæতগামি কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় তার মৃত্যু হওয়ার কথাটি জানায়। তিনি আরও বলেন, হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে ‘৯৯৯’ এ ফোন করে বলা হয়, দুর্ঘটনায় আহত দুইজন তাদের হাসপাতালে এসেছে। সেখান থেকে থানায় ফোন করা হলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের অনেকের সঙ্গে কথা বলি। কেউই নিজ চোখে দেখেনি বলে জানায়।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের পর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে নিহত ছাত্রীর সহপাঠী ও স্বজনরা হাসপাতালের সামনে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেন। তারা ঘাতক কাভার্ড ভ্যান চালক ও উবার রাইডারের শাস্তি দাবি করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় বারবার শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হলেও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ছে না। অভিযুক্তদের যথাযথ শাস্তি না হওয়ায় এমন দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেই চলছে। নিহত ছাত্রীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন