তালুকদার হারুন : রাজউককে গতিশীল, স্বচ্ছ. জবাবদিহিমূলক ও গঠনমূলক করতে নির্দেশনা দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার। গত এপ্রিল মাসে রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের বোর্ড সভায় যোগ দেওয়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির পর্যবেক্ষণ এবং জানুয়ারি ও মার্চের বোর্ড সভার কার্যপত্রের ভিত্তিতে নয় দফা নির্দেশনা তৈরি করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব। এ নির্দেশনা পাওয়ার পর কাজ শুরু করেছেন রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান।
সচিবের নির্দেশনায় বলা হয়েছে- সভার সাত দিন আগে বোর্ড সভার আলোচ্যসূচি সদস্যদের কাছে পাঠাতে হবে। বোর্ড সভার আলোচ্যসূচি পূর্ব নির্ধারিত থাকবে। বোর্ড চলাকালীন নতুন কোন আলোচ্যসূচি অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এছাড়া নীতিগত বিষয়, নতুন প্রকল্প গ্রহণসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়গুলো বোর্ড সভায় সিদ্ধান্তের জন্য উপস্থাপন করতে হবে। কোন অবস্থাতেই যে সকল বিষয় নির্বাহী ক্ষমতা/প্রশাসনিকভাবে নিষ্পত্তি করা সম্ভব- ওই সকল রুটিন বিষয় (পূর্ত কাজের প্রাক্কলন অনুমোদন, প্রাক্কলন সংশোধন, টিইসি-এর সুপারিশ অনুমোদন, ঠিকাদারী কাজের সময় বৃদ্ধি, পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন অনুমোদন ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পের পরামর্শকরণের আদেশ জারি ইত্যাদি) বোর্ডসভায় উপস্থাপন করা যাবে না। নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে- বোর্ড সভায় চেয়ারম্যান, সদস্য এবং বোর্ডের সচিব ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত থাকবেন না। তবে বোর্ড প্রয়োজন মনে করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/বিশেষজ্ঞ কাউকে নোটিশের মাধ্যমে বা তাৎক্ষণিকভাবে বোর্ড সভায় উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করতে পারবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, অসম্পূর্ণ তথ্য সম্বলিত এজেন্ডা বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা যাবে না। এছাড়া উন্মুক্ত দরপত্র পরিহার করতে একটি বড় ক্রয় প্রক্রিয়াকে ভেঙ্গে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি (এলটিএম) ব্যবহার করা যাবে না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সব ধরনের টেন্ডার কার্যক্রম ই-টেন্ডারিং এর মাধ্যমে আবশ্যিকভাবে শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে বোর্ড সভা প্রতি মাসে একবারের পরিবর্তে প্রয়োজনবোধে একাধিকবার আয়োজন করা যাবে।
সচিবের নির্দেশনায় আরো বলা হয়, টাউন ইমপ্রæভমেন্ট এ্যাক্ট, ১৯৫৩ এর২৭(১) ধারা সংশোধন করে রাজউকের চেয়ারম্যানের আর্থিক ক্ষমতা পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর/ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রধানের মতো বাড়ানোর প্রস্তাবনা রাজউক বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে অর্থ বিভাগের জারিকৃত আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ বিষয়ক নির্দেশিকার আলোকে রাজউক বোর্ড রাজউকের চেয়ারম্যান, বোর্ড সদস্য এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের পূর্বানুমতি নিয়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবে।
রাজউক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সচিবের এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন হলে রাজউকের প্রশাসনিক ও আর্থিক শৃঙ্খলা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সৃষ্টি হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন