সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অনুরোধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি‘র পদত্যাগের দাবিতে আমরন অনশন সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তৃতীয় দিনের অনশন চলাকালে শুক্রবার রাতে শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. হানিফের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দলের অনুরোধে অনশন স্থগিত করা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পানীয় পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান প্রফেসর হানিফ।
তবে সোমবারের মধ্যে উপাচার্যকে অপসারন করা না হলে আবারও ছাত্র-শিক্ষক সভা করে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচী ঘোষনার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবু জাফর মিয়া। এমনকি সোমবারের মধ্যে দাবি আদায়ের কোন খবর না আসলে অনশনে অংশ নেওয়ার ঘোষনা দেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সদস্য অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল। প্রফেসর মো. হানিফ এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুসও শিক্ষার্থীদের অনশনে যোগ দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে ভিসি প্রফেসর ড. এসএস ইমামুল হকের অপসারনের একদফা দাবিতে ববি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমরন অনশনের তৃতীয় দিনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদকসহ ৪ জন শিক্ষক এবং ১০ জন শিক্ষার্থী। তাদের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়।
দুপুরে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গাতে যান সিন্ডিকেট কমিটির সদস্য ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভিসি‘র অপসারন সংক্রান্ত ঘোষনা ছাড়া অনশন ভঙ্গ করবেন না বলে জানিয়ে দেন। দুপুরে শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা দেখতে যান শের-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. মো. বাকীর হোসেন।
ভিসি‘র অপসারনের দাবিতে টানা একমাস ধরে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যলেয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ওই রাতেই তাদের সাথে অনশনে যোগ দেন শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদকসহ ৫ শিক্ষক।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি‘র অপসারন দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত রাখবেন। সোমবারের মধ্যে ভিসিকে অপসারন না করা হলে ফের কঠোর কর্মসূচী দেওয়ার হুশিয়ারী জানিয়ে দেন তারা। অনশন স্থগিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো। গত ২৮মার্চ অনির্দিষ্টকালেল জন্য বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করেন কতৃপক্ষ।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন না জানানোয় প্রতিবাদ করলে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দরাজাকারের বাচ্চা‘ বলে কটুক্তি করেন। এর প্রতিবাদে ও ভিসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া সহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ মার্চ ভিসি তার বক্তব্যকে ভূলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান। পাশাপাশি দুঃখও প্রকাশ করেন।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না হয়ে ভিসি‘র পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর এসব কারনে শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন ভিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন