বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মাদকের দুই মামলায় রোববার বিজ্ঞ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আহম্মেদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোঃ জসিম উদ্দিন এবং আদালত সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নগরীর রূপাতলীর ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিশ্রামাগারের একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ৪৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার এবং পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম সানি ও ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম তালুকদারকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই অভিযানের সময় জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকেও আটক করার অভিযোগ উঠেছিল। তখন অজ্ঞাত কারনে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ডিবির উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে মাদক আইনের পৃথক ধারায় কনষ্টেবল সাইফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল ইসলাম ও জাহিদুলকে আসামী করে একটি এবং শুধু জাহিদুলকে আসামী করে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের সময়ও রহস্যজনক কারণে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকে আসামী করা হয়নি।
মামলার এজাহারে জাহিদুর রহমান মনির মোল্লাকে আসামী করা না হলেও গ্রেফতার হওয়া ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগ নেতা মনির মোল্লার ছত্রছায়ায় থেকে তারা কাশীপুর সহ বরিশাল নগরীতে ইয়াবা ব্যবসা করার কথা জানায়। পরে ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর ডিবির পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা সহ মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট দেন। মনির মোল্লাকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের একটি মামলায় ৪ নম্বর ও অপর মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মনির মোল্লার সঙ্গে চট্টগ্রাম, টেকনাফ ও কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। ২০১৭ সালের ২০ জুলাই থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মুঠোফোনে এক হাজার ৮৩৫ বার কথা বলেছেন মনির মোল্লা। একই সময় ৬৬৯টি এসএমএস আদান-প্রদান করেন। তাছাড়া শুধুমাত্র ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনির মোল্লা তার সহযোগি মাদক ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ২৪২ বার এবং ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা হতে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত মোট ২২ বার কথা বলেন। এ সময়ের মধ্যে আদান প্রদান হয় ১১৮টি এসএমএস। যার বেশিরভাগই ইয়াবা ক্রয়-বিক্রয় ও লাভের টাকার বিষয় সংক্রান্ত। অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয় ইয়াবা বিক্রী করে ২০ হাজার টাকা লাভ হলে ১০ হাজার টাকা মনির মোল্লাকে দিতে হত।
আত্মসমর্পন করার পরে বিজ্ঞ আদালত মনিরকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। বিষয়টি নগরীতে যথেষ্ঠ চাঞ্চল্যেও সৃষ্টি করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন