শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ” এ কথা টা আমরা সবাই জানি। কুঁড়িকে যত্ন নিলে যেমন সেখান থেকে সৌরভময় ফুলের সৃষ্টি হয় তেমনি শিশুদের কে সঠিকভাবে গড়ে তুললে তারাও একদিন ফুল হয়ে সমাজে সৌরভ ছড়াবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আজ ও শিশুদের অধিকার সঠিক ভাবে নিশ্চিত করতে পারিনি। যার জন্যে আজ ও শিশুদের স্কুলের পরিবর্তে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে দেখা যায়। যে বয়সে তাদের হাতে খেলনা আর বই থাকার কথা ছিলো ঠিক সে বয়সে জীবন যুদ্ধের সাথে পাল্লা দিতে তাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। যদি ও আমাদের দেশে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।তবুও রাস্তায় বের হলেই বহু শিশু শ্রমিক আমাদের চোখে পরে । অথচ এ শিশু গুলোকে শিক্ষিত করতে পারলেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে, সমাজ আরো উন্নত হবে, রাষ্ট্রের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
বেশীর ভাগ মানুষ এই শিশু শ্রমের জন্য তাদের দারিদ্র তাকেই দায়ী করেন। তাই একটু খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্যে এই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়। আমার স্কুলে একজন ছাত্রী আছে তার নাম মনি। ক্লাস ফোর এর ছাত্রী। টাকার অভাবে তার এবং তার বড় ভাই (৫ম শ্রেণিতে পড়ে) দু জনের পড়ালেখাই পরিবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। তাদের পড়ালেখার দায়িত্ব আমরা নেয়ার পরেও শুধু মাত্র মনিকেই তার পরিবার স্কুলে দিতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু মনির ৫ম পড়ুয়া ভাইকে তারা আর পড়ালেখা করতে দেন নি। এ ব্যাপারে তাদের একটাই যুক্তি ছিলো তাদের দারিদ্রতা। ছেলেকে কাজ করতে হবে। না হলে সংসার চলবে না। এবং কথা টা যে মিথ্যা এমন টি ও নয়। আর এ চিত্রটাই সমাজে বেশী দেখা যায়। কাজেই শুধু মাত্র নিয়মের মধ্যে না থেকে আমাদের সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের এদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। শুধু মাত্র সরকারের একক প্রচেষ্টায় কোনদিন শিশু শ্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি তবেই এ দেশ থেকে শিশু শ্রম বন্ধ করা সম্ভব। পাশাপাশি সরকারের ও আরো বেশী দায়িত্ববান হওয়া উচিত যেনো আর একজন শিশুকেও কাজ করতে না হয়।
বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে গিয়ে শিশুদের হাজারো নির্যাতনের শিকার হতে হয়। লাঞ্চিত হতে হয় যার প্রমাণ আমরা পত্রিকার পাতাতেই বেশ দেখতে পাই। পাশাপাশি অনেক ঝুকি পূর্ণ কাজেও শিশুদের কে ব্যবহার করা হচ্ছে যার জন্য প্রায়ই বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে এ কোমলমতি শিশুদের।
আজ শ্রমিক দিবস। সবাই শ্রমিকদের নিয়ে কথা বলবে। টিভিতে টিভিতে তাদের নিয়ে টকশো হবে। বড় বড় বচন দেওয়া হবে। তাদের অধিকারের বুলি ফোটানো হবে।
তাদের অধিকার কতটুকু নিশ্চিত হবে জানিনা। আশা করছি একজন শ্রমিক ও আর অধিকার বঞ্চিত হবে না। পাশা পাশি ভয়ংকর এই শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ হবে। তাদের পথ কারখানায় নয়, স্কুলের দিকে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন