লোহাগাড়া উপজেলার আভ্যন্তরীণ কঁাঁচা-পাকা সড়কগুলোতে বেপরোয়া বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে সড়ক ও ব্রিজ ভেঙে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে পুরো গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বালুর গাড়িগুলোর ভার সইতে না পেরে প্রতিনিয়ত ভাঙছে সড়ক। উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামীণ সড়কগুলোতে নিত্যদিন চলাচল করছে বালুর গাড়ি। আজ এই রাস্তা ভেঙেছে তো কাল অন্য রাস্তা। এলাকার কাচা পাকা সড়ক কোনটাই বাদ পড়ছে না। সামনের বর্ষায় এই সড়কগুলি দিয়ে যান চলাচলতো দূরের কথা হেটে চলাও দায় হয়ে পড়বে। কাঁচা ও ব্রিক সলিং সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। বর্ষার পানিতে গর্তগুলো এক একটা ডোবায় পরিনত হয়। উপজেলার ডলু, হাঙ্গর, সরাই, টংকাবতীসহ বিভিন্ন খাল থেকে নিয়মিত বালু উত্তোলন করে বড় বড় ট্রাকে করে তা বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সড়কগুলোর ধারন ক্ষমতা যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ টন। আর বালু বহনকারী দৈত্যাকার খালি ট্রাকের ওজনই রয়েছে ৯-১০টন। ট্রাকগুলোতে বালু নেওয়া হয়ে থাকে ২৫-২৬টন। বালু বহনকারী ট্রাকগুলো গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে থাকলে কয়েকমাস পরই রাস্তার অবস্থা কাহিল হয়ে উঠে। রাস্তা ভেঙে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এর উপর আবার কালভার্টও ভেঙে পড়ছে।
ইতিমধ্যে দরবেশহাট ডিসি সড়কের উপর নির্মিত হাছনা ভিটা ব্রিজ,পুটিবিলা সরাই খালের ব্রিজ, পানত্রিশা বুড়ির ঝিরি ব্রিজ, পুটিবিলা রামবিলা সড়কের কেইচ্ছা ঝোড়া ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। কারণে বর্তমানে লোহাগাড়ার ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ দরবেশহাট ডিসি সড়ক, পুটিবিলা সরাইয়া সড়ক, চুনতি শাহ জব্বারিয়া সড়ক, চুনতি ফারাঙ্গা সড়ক, চুনতি জয়নগর সড়ক, আধুনগর হরিনা সড়ক, কালিহাট ডিসি সড়ক, আধুনগর আমতলী সড়ক, আমিরাবাদ স্কুল সড়ক, আমিরবাদ সুখছড়ি কালিবাড়ী সড়ক, জঙ্গল পদুয়া সড়ক, চরম্বা রাজঘাটা সড়ক, পদুয়া আধারমাসিনক সড়ক, পদুয়া ধলিবিলা সড়ক, চরম্বা মহাজন মসজিদ সড়ক, চরম্বা বাইয়ার পাড়া সড়ক, চরম্বা টেকের দোকান সড়ক, সুখছড়ি উজিরভিটা সড়ক, আধুনগর উজিরভিটা সড়ক, পুটিবিলা ডিসি সড়ক, পুটিবিলা দেওয়ানজী সড়ক, পুটিবিলা নাথপাড়া সড়ক, পুটিবিলা রামবিলা সড়ক, পুটিবিলা নয়াপাড়া সড়ক, গৌড়স্থান হরিনা সড়ক, গৌড়স্থান নয়াপাড়া সড়ক, এলাকার ছোট বড় অর্ধশতাধিক সড়ক বর্তমানে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
আমিরাবাদের পুরান বিওসি থেকে তেইল্যার ঘাটা সড়কটির পুরোটাই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বালু ব্যবসায়ীরা সরকারদলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় রয়েছে। যার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুটিবিলার অর্ধশত পরিবার মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে ঘরছাড়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে কোন সময় কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ সড়কগুলোর উপর অতিরিক্তি বালু বহনকারী গাড়িগুলোর ব্যাপারে যদি কোন ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে গ্রামীণ রাস্তাগুলো হয়তো পুরোপুরিই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন