শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

৫ মে শাপলা চত্বরের শহীদ ও আহতদের জন্য দেশবাসীর প্রতি দোয়ার আহবান- আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৯, ৮:০১ পিএম | আপডেট : ৮:০২ পিএম, ৪ মে, ২০১৯

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী (আজ) এক যৌথ বিবৃতিতে ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে শহীদ ও আহতদের জন্য দেশবাসীর প্রতি দোয়া করার আহবান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, কতিপয় নাস্তিক আল্লাহ, রাসূল, পবিত্র কুরআন-হাদীস অবমাননা এবং ইসলামের প্রতীকসমূহের ওপর জঘন্যতম আক্রমণ করেছে, ইসলাম, মুসলমান ও আলিম-ওলামাদের হেয়প্রতিপন্ন করার হীন চেষ্টায় চালিয়েছে, মাদারিসে দীনিয়্যার বিরুদ্ধে হরদম মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার অপতৎপরতা চালিয়েছে, তখনই এদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে শান্তিপূর্ণভাবে হেফাজতে ইসলাম ৫ মে ২০১৩ সালে রাজধানী ঢাকা অবরোধ করেছিল।

যা বাংলদেশের হক্কানী ওলামা-পীর-মাশায়েখ, আশেকে রাসূর সা. ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার জন্য রক্তঝরা এক ঐতিহাসিক দিন। ঐদিনের ট্রাজেডি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মর্মান্তিক, মর্মন্তুদ ও বেদনাদায়ক।

হেফাজতে ইসলাম নেতৃদ্বয় আরা বলেন, সারা দিন অবরোধে অবস্থান নেয়া হেফাজত কর্মীরা যখন ক্ষুধা, পিপাসায় ক্লান্ত শরীরে হাহাকার তখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের জন্য সরবরাহকৃত খাবার ও পানির গাড়ি বন্ধ করে, সন্ধ্যা থেকেই রাস্তার লাইট বন্ধ করে, মতিঝিলের আশপাশের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিটঘুটে অন্ধকার তৈরী করে ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড চালিয়েছে নিরস্ত্র ঈমানদার নবীজী সা. এর সৈনিকদের ওপর।

নেতৃদ্বয় বলেন, পত্রিকার রিপোর্ট মতে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, পিপার গান, বৃষ্টির মতো সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির যৌথ বাহিনী নিরীহ, নিরাপরাধ, তাহাজ্জুদ গুজার, জিকিররত আলেম হাফেজ ও আশেকে রাসূলদের ওপর।

হেফাজতে ইসলাম নেতৃদ্বয় বলেন, এই নজির বিহীন হত্যাকান্ড ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতার চাইতেও ভয়াবহ। ২০১৩ সালের ৫ মের শাপলা চত্বরের গণহত্যা চালিয়ে যৌথ বাহিনী ইতিহাসে এক নতুন কারবালা সৃষ্টি করেছে। তাদের জানা দরকার, হেফাজত কাফেলার মাতৃভূমি কিন্তু বাংলাদেশ। তারা এদেশের নাগরিক, আইন বিরোধী কোন কর্মকান্ডে তারা জড়িত নয়, কোন দাগী আসামিও নয়। আলেমরা শান্তি প্রিয়, সমাজে তারা মর্যদাশালী। এরা কোন অন্যায় করেনা। আলেম ওলামাদের সাথে জুলুমের পরিনতি খুব ভয়াবহ। আল্লাহর অলিদের বিরুদ্ধে যারা বিদ্বেষ পোষণ করে, অন্যায় জুলুম করে অল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, ২০১৩ সালে ৫ই মে ঢাকার শাপলা চত্বরে যারা রক্ত দিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, তারা কেবল মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সা. এর ভালবাসা নিয়ে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দাবি নিয়ে সেদিন ময়দানে নেমেছিল সে দাবি আজও পূরণ হয়নি। বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে ঈমানি আন্দোলন বন্ধ করার নানা চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে।

১৩ দফা দাবি আদায়ের ঈমানি আন্দোলনকে মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছানোর অঙ্গিকার ব্যক্ত করে তারা বলেন, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের আস্ফালন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। আল্লাহর জমিনে খোদাদ্রোহীদের থাকার অধিকার নেই। এদেশ অলি-আউলিয়া ও আশেকে রাসূলদের জন্মভূমি। লাখো আলেম-হাফেজ-মুফতি-মুহাদ্দিস-দরবেশ-বুজুর্গ এদেশের মাটিতে শুয়ে আছেন। কোনো আগ্রাসী অপশক্তির সামনে ওয়ারিছে আম্বিয়া আলেম সমাজ কখনোই মাথা নত করেনি। বর্তমানেও কোনো সাম্রাজ্যবাদী-ব্রাহ্মণ্যবাদী-আধিপত্যবাদী বহিঃশক্তির তোয়াক্কা করে না। ইসলাম, মুসলমান, ঈমান-আক্বিদা, তাহজীব-তমদ্দুন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত আসলে তাঁরা জীবন বাজি রেখে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

তারা বলেন, ঈমান রক্ষার আন্দোলনে যারা শাহাদত বরণ করেছেন তারা আমাদেরই ভাই, তাদেরকে আমরা ভুলে যেতে পারি না। শাপলা চত্বরের শহীদদের বিচার বাংলার সবুজ চত্বরে একদিন হবে ইনশাআল্লাহ। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে বাংলার জমিনে একদিন ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডিন হবে। যারা সেদিন শাহাদাত বরণ করেছেন আমরা দোয়া করি আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আর যারা আহত হয়েছেন আল্লাহ তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। তারা দেশবাসীকে শহীদ ও আহতদের জন্য দোয়া করার আহবান জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন