বর্তমান সরকার দেশে দুর্নীতি বন্ধে নানান ধরনের পদক্ষেপ নিলেও দুর্নীতি বন্ধে কোন কৌশলই কাজে আসছে না। বিশেষ করে সাভার উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। তবে দুর্নীতির শীর্ষে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন। তার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বন বিভাগের জমি অন্যের নামে রেকর্ড করে দেয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া হেমায়েতপুরের যাদুরচর এলাকার সরকার মো. আবু তাসেক ভ‚মি মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ দুর্নীতির মূল হোতা উপ-সহকারি সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেনকে বৃহস্পতিবার স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, উক্ত অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। তবে বরাবরই দুর্নীতির শীর্ষে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন ও বেঞ্চক্লার্ক (বিসি) মহিবুর রহমান। বিধি ভঙ্গ করে সাভারে তিনি ২০০৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল প্রায় ১৪ বছর ধরে চাকুরি করছেন। নিয়ম হচ্ছে, এক স্টেশনে ৩ বছরের বেশী চাকুরি করা যাবে না। আবার যিনি ভ‚মি জরিপের মাঠ পর্যায়ে খানাপুরি, বুজারত, কিস্তোয়ার করেন তিনি এ্যাটস্টেশনের পর্যায়ে কাজ করতে পারেন না। কিন্তু তিনি সাভারে বিলামালিয়া মৌজাসহ একাধিক মৌজায় মাঠ পর্যায়ের কাজ ও এ্যাটস্টেশনের কাজ করেছেন।
অভিযোগ পাওয়াযায়, আকতার হোসেন তার বেঞ্চক্লার্ক মহিবুর রহমানের সহযোগীতায় কমলাপুর, ছোট কালিয়াকৈর, বাগ্নীবাড়ী, সিরাজের টেকসহ একাধিক মৌজায় বন বিভাগের সম্পত্তি থাকলেও লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে বন বিভাগের জমি স্থানীয় একটি হাউজিং এর নামে রেকর্ড করিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়াও আকতার হোসেন সাভারে যোগদানের পর থেকে নিজেকে সরকার দলীয় এক নেতার আত্মীয় পরিচয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেই যাচ্ছেন। তার ঢাকায় বাড়ি, একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ী রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে রয়েছে লাখ লাখ টাকা।
সম্প্রতি উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী, ভ‚মি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যাদুরচর এলাকার সরকার মো. আবু তাসেক।
তার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিলামালিয়া মৌজায় আর এস ২২৭, এসএ ও সিএস ১৮৯ দাগে দুটি দলিলে ১৭ শতাংশ জমি মাঠজরিপ করাতে গেলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তসদিক কর্মকর্তা আকতার হোসেন ২২৮ নং দাগের রোকেয়া বেগমের নামে ১৬ শতাংশ জমি রেকর্ড করিয়ে দেন। যার খতিয়ান ও জোত নং ভিন্ন ভিন্ন।
তাসেক আরও জানায়, তার দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার আকতার হোসেনকে সাভার উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
এরআগেও স্থানীয় এক সাংবাদিকের করা মামলায় তার সিনিয়র কর্মকর্তা সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার (এএসও) আমির হোসেন ৬ দিন জেল হাজতে ছিলেন।
জানা গেছে, সল্প শিক্ষিত আকতার এক সময়ে ছিলেন ট্রাভার সার্ভেয়ার। প্রমোশন পেয়ে তিনি উপ-সহকারি সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হন। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারি হয়েও তিনি সর্বদাই দামী এক্স করলা প্রাইভেটকার নিয়ে চলা ফেরা করেন। তার ঢাকায় বাড়ি, একাধিক ফ্লাট, শরিয়তপুরে রয়েছে বিশাল বাগানবাড়ি।
তবে দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে সাভার সেটেলমেন্ট অফিসের উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আকতার হোসেন নিজেকে সৎ কর্মকর্তা দাবী করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন