বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ‘জঙ্গি শনাক্তকরণ’ বিজ্ঞাপনটি নিজেদের নয় বলে দাবি করেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। সম্প্রীতি বাংলাদেশের নামে বিজ্ঞাপনটি গত ১২মে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস 'গাহি সাম্যের গান' স্লোগানে সম্প্রতি বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ নামে সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, অসত্য তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে দেশের সরলপ্রাণ মানুষদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার অংশ এই অপপ্রচার। গত ১২ মে দেশের কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রচারিত বিজ্ঞাপনটির সঙ্গে সম্প্র্রীতি বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্প্রীতি বাংলাদেশের নামে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটি নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে তা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রকাশিত জঙ্গি শনাক্তকরণ বিজ্ঞাপনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ‘সন্দেহভাজন জঙ্গী সদস্য সনাক্তকরণের (রেডিক্যাল ইন্ডিকেটর) নিয়ামকসমূহ’ শিরোনামে সেই বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্ররা জঙ্গি মতাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জঙ্গি হামলা ও টার্গেটেড কিলিং মিশনে অংশগ্রহন করে শহীদের মর্যাদা প্রাপ্তির ভুল নেশায় ডুবে রয়েছে। এ রেডিক্যাল ইয়ুথ সদস্যদের অনেকেই বিদেশে উচ্চ শিক্ষা/উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে গিয়ে রিক্রুটারদের মাধ্যমে কৌশলে ব্রেইন ওয়াশের শিকার হচ্ছে এবং পরবর্তীতে জঙ্গি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিতে পরিণত হচ্ছে ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে গমন করে (সিরিয়া, ইরাক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, লিবিয়া, কাশ্মীর প্রভৃতি) জঙ্গি আক্রমনের পরিকল্পনা ও আত্মঘাতি হামলায় অংশগ্রহন করছে। এ সকল জঙ্গি সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ, নজরদারী, ব্যক্তিগত প্রোফাইল দীর্ঘদিন ধরে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে নিম্নে উল্লেখিত রেডিক্যাল ইন্ডিকেটরসমুহ ১২ থেকে ৩৫ বৎসর বয়সী যুবকদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।’
এরপর ওই বিজ্ঞাপনে ১৮ টি রেডিকেল ইন্ডিকেটরের বর্ণনার পাশাপাশি রেডিকেলাইজেশনের চারটি ধাপ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘আপনার পরিবারে বা আশেপাশে কারো মধ্যে এ লক্ষনসমুহ দেখা গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিন।’
বিজ্ঞাপনটির সঙ্গে সংগঠনটির সম্পর্ক অস্বীকার করে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১২ মে দেশের বেশকিছু জাতীয় পত্রিকায় প্রচারিত বিজ্ঞাপনটির সঙ্গে কোনো পর্যায়েই আমাদের প্রিয় সংগঠন সম্প্রীতি বাংলাদেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সম্প্রীতি বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি সামাজিক সংগঠন। দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করতেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি এমন অপপ্রচার চালিয়েছে। সম্প্রীতি বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
তিনি বলেন, সম্প্রীতি বাংলাদেশ সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্বার পক্ষে কাজ করে চলেছে। সম্প্রীতি বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি সামাজিক সংগঠন।
তিনি বলেন, এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সতেজ ও সক্রিয় থেকে দেশ, সমাজ ও মানুষের ভাল কাজটি করে যাবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, সম্প্রীতি বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত সমাজের মানবিক বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সুন্দর এক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) উপস্থাপনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার, সাবেক সংস্কৃতি ও তথ্যসচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, খ্রিস্টান অ্যাসোয়িশনের সভাপতি উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার, দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক আলী হাবিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন