দেশ রক্ষার দায়িত্ব যাদের উপরে, তাদের বিরুদ্ধে মহিলা সহকর্মীদের প্রতি ‘কুৎসিত মানসিকতা’র মারাত্মক রিপোর্ট সামনে এল। মহিলা সহকর্মীদের ‘ধর্ষণের তালিকা’ তৈরি করার অভিযোগ উঠল মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন ইউএসএস ফ্লোরিডায় নিযুক্ত পুরুষ কর্মীদের বিরুদ্ধে। রিপোর্টে যে ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, তা এক বছর আগের হলেও সম্প্রতি সেই তথ্য ফ্রিডম অফ ইনফরমেশন অ্যাক্ট-র মাধ্যমে মিলিটারি ডট কম নামে একটি ওয়েবসাইটের হাতে এসে পৌঁছয়। শুক্রবার সেই রিপোর্টটিই প্রকাশ করে তারা।
৭৪ পাতার সেই তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-র পুরুষ সদস্যদের মধ্যে মহিলাদের নাম নিয়ে তৈরি করা দু’টো তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে। ৩২ জন মহিলাকে নিয়ে ওই দুই তালিকা তৈরি হয়েছে। এই ৩২ জন মহিলাও সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-তে নিযুক্ত।
দু’টো তালিকার একটিতে ৩২ জন মহিলাকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তারকা চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যটিতে মহিলাদের নামের পাশে যৌনতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে। কোন মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে কী ধরনের যৌন কার্যকলাপ চালানো হবে, তা লেখা রয়েছে তাদের নামের পাশে। যার প্রত্যেকটিই আক্রমণাত্মক যৌনতার পরিচয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দু’টো তালিকাই সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-র সমস্ত পুরুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। দু’টো তালিকাই প্রথমে গোল্ড ক্রু-র কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে রাখা ছিল। প্রথমে ক্রু-র এক সদস্য সেটা দেখতে পান। প্রিন্ট আউট বার করে তিনি তার কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান। তারপর বিষয়টা ক্রমশঃ জানাজানি হয়ে যায় এবং সমস্ত পুরুষ সদস্যের কাছেও তালিকার প্রিন্ট আউট ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের জুন মাসে। কে এই তালিকা বানিয়েছেন, তা টানা দু’মাস তদন্ত করেও বার করতে পারেননি সাবমেরিনের ক্যাপ্টেন গ্রেগরি কেরচার। তাই ২০১৮ সালের অগস্টে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আরও দুই নাবিককে সরিয়ে দেওয়া হয়, ঘটনাটিকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
আমেরিকার সাবমেরিন ফোর্সের কমান্ডার রিচার্ড মিলিটারি ডট কম-কে বলেছেন, ‘এই ঘটনা যে ফের ঘটবে না তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে ফোর্সের মধ্যে আচরণ এবং চরিত্রের মানোন্নয়ন করা হবে, এটা নিশ্চিত।’ সূত্র: নিউজ উইক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন