৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল, জলাশয় পুন:খনন প্রকল্পের আওতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাগলা নদী খনন কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বুধবার দুপুরে এই খনন কাজের উদ্বোধন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। এ উপলক্ষে শ্যামপুর নারী কল্যাণ শিক্ষালয় প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ডা. শিমুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম আমিনুজ্জামান, কানসাট ইউপি চেয়ারম্যান বেনাউল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা। জানা গেছে, জেলার নাব্য হারানো নদীগুলোর মধ্যে পাগলা নদীর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার। নদীটি ভারতের মালদহ জেলার মহদিপুর হতে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পাগলা ছিল খর¯্রােতা একটি নদী। কিন্তু উজানে বাঁধের কারণে পানি প্রবাহ কমে যায়। এছাড়া পদ্মা নদীর বামতীর সংরক্ষণ বাঁধের কারণে পদ্মা নদীর সংযোগ বন্ধ হওয়ায় পাগলা নদীটি নাব্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়। এ নদীর পানির উপর নির্ভরশীল ছিল শিবগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া, ছত্রাজিতপুর, নয়ালাভাঙা, উজিরপুর, পাঁকা, দুর্লভপুর, কানসাট, শ্যামপুর ও শাহবাজপুর ইউনিয়নের জনসাধারণ। এছাড়াও সদর উপজেলার রানীহাটি ও সুন্দরপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের ইউনিয়নের বাসিন্দারা। কিন্তু আষাঢ় মাসেও এই নদীতে পানি থাকে না। ফলে পানি না থাকায় এক সময়ের খর¯্রােতা নদী তীরবর্তী জনসাধারণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ব্যাহত হয় চাষাবাদ। হারিয়ে যায় দেশি প্রজাতির সুস্বাদু মাছ। এমন অবস্থায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড পাগলা নদী খনন নামে একট প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি একনেকে পাস হবার পর দরপত্র আহ্বান ও গ্রহণ শেষে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কার্যাদেশও দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নদীর খনন কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর হতে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের কালিনগর পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার পাগলা নদী খনন করা হবে। দুই বছর মেয়াদে খনন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এ কাজে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি টাকা। এছাড়া আগামী ২ বছরের মধ্যে খনন কাজ শেষ হলে নদী তীরবর্তী কয়েক লাখ লোক উপকৃত হবে। নদীর পানি সেচসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। দেশী প্রজাতির মাছ চাষ করে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব পাবে। ফিরে আসবে জীববৈচিত্র এমনটাই আশা করছেন নদী তীরবর্তী মানুষের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন