স্টাফ রিপোর্টার : শতাধিক শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নাক, কান, গলা বিভাগ। এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রাম ইন-এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও অন্য সহায়ক স্টাফরা। শব্দহীন পৃথিবীতে থেকে এসব শিশু ফিরে পেয়েছে শব্দময় পৃথিবী। কানে শুনতে না পাওয়া, কথা বলতে না পারা এসব শিশুর বাবা-মায়েরা নিজ নিজ সন্তানের মুখে শুনতে পেয়েছেন মা, বাবা এমন হৃদয়স্পর্শী, মধুরতম প্রাণের ডাক। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা: মিলন হলে অনুষ্ঠিত ৪র্থ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারির কর্মশালায় অংশ নেয়া কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট গ্রহীতা শিশুদের বাবা-মায়েরাও ছিল অনেকটাই আবেগাপ্লুপ্ত।
কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। বিএসএমএমইউতে ইতোমধ্যে ১০৮ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধীর সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, ক্ষেত্রবিশেষে নামমাত্র মূল্যে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে। নতুন করে আরো ৭৫ শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুকে এ সেবা দেয়া হবে। দিনব্যাপী আয়োজিত এ কর্মশালায় যুক্তরাজ্য, ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তায় ও বিএসএমএমইউর পরিচালনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক, কান, গলা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রাম ইন, বিএসএমএমইউ (২য় পর্যায়)-এর উদ্যোগে আয়োজিত ৪র্থ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি কর্মশালায় এসব তথ্য প্রকাশ করা হয় এবং এমন চিত্রই ফুটে ওঠে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী মো: বাবুল হাসান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা: কামরুল হাসান খান। ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের কর্মসূচি পরিচালক প্রফেসর ডা: মো: আবুল হাসনাত জোয়ারদার। বক্তব্য রাখেন নাক, কান ও গলা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী, সহযোগী অধ্যাপক ডা: নাসিমা আখতার, সহযোগী অধ্যাপক ডা: এ এইচ এম জহুরুল হক সাচ্চু, ইউকে-এর কুইন এলিজাবেথ হসপিটাল বার্মিংহামের ইএনটি সার্জন কনসালট্যান্ট রিচার্ড আরভিং প্রমুখ। কর্মশালায় দ্বিতীয় পর্যায়ে বৈজ্ঞনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. চৌধুরী মো: বাবুল হাসান তার বক্তব্যে ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পটি চালু রাখতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা: কামরুল হাসান খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা, শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বর্তমান প্রশাসন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিভাবকরা বলেন, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। উন্নত দেশের অনেক নাগরিকের পক্ষেও এ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এ মহতী চিকিৎসাসেবাটি চালু করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ জানান। তারা শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য এ মহতী প্রকল্পটি চালু রাখার জন্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন