ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা : ফরিদপুরে ১২ কিলোমিটার অংশের এক হাজার ৯০০ রেনডি কড়াই গাছ কাটা নিয়ে সড়ক বিভাগের সাথে বন বিভাগের টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগ নিজেদের মালিকানা দাবি করে টেন্ডারের মাধ্যমে ওই গাছগুলি বিক্রি করে দিয়েছে। অপরদিকে সড়ক বিভাগ ওই গাছগুলির প্রতি নিজেদের মালিকানা দাবি করে আপত্তি দিয়েছে।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের বদরপুর থেকে কানাইপুর বিসিক শিল্প নগরী পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশে ৯৯৫টি গাছ রয়েছে। এ গাছগুলি ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে রোপণ করা হয়েছিল। অপরদিকে ওই একই সড়কের রাজবাড়ি রাস্তার মোড় থেকে বাহিরদিয়া সেতু পর্যন্ত আট কিলোমিটার অংশে এক হাজার ১০০ গাছ রয়েছে। এ গাছগুলি রোপণ করা হয় ২০০২-০৩ অর্থবছরে।
গত ২০ এপ্রিল বন বিভাগ ওই গাছগুলি টেন্ডার আহŸান করে। টেন্ডার আহŸানের পর গত ৩ মে সড়ক বিভাগ ‘প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ না করে অবৈধভাবে সওজের মালিকানাভুক্ত গাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে দরপত্র আহŸান’ মর্মে আপত্তি জানিয়ে জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের নিকট একটি আবেদন জানায়। গত ৯ মে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ ব্যাপারে আলোচনাও হয়।
এদিকে বন বিভাগ টেন্ডার করে দেড়শ লটে গাছগুলি বিক্রি করে দেয়। ৭৭টি লটের জন্য গাছ কাটার অনুমতি পাওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল থেকে গাছ কাটা শুরু হয়। এদিকে সড়ক বিভাগের আপত্তির কারণে জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) আহŸায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। গত বৃহস্পতিবার এ কমিটি প্রথম সভা করে।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই গাছগুলির মালিক সড়ক বিভাগ। অথচ বন বিভাগ টেন্ডার করে গাছগুলি বিক্রি করে দিয়েছে। এ ব্যাপরে আমরা আপত্তি দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার এ কমিটি প্রথম সভা করেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান মিয়া বলেন, গালগুলি সড়ক বিভাগের জায়গায় রোপণ করা হলেও গাছগুলির মালিক বন বিভাগ। ফরিদপুরে বন বিভাগের নিজস্ব জায়গা নেই। তারা সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জায়গায় গাছ রোপন করে। একটা সময় পর গাছগুলি কাটা হয়। কাটা গাছের টাকা এজন্য জায়গার মালিক, উপকারভোগী, ইউনিয়ন পরিষদ ও বন বিভাগ ভাগ করে নেয় তিনি বলেন, সড়ক বিভাগের আপত্তির কারনে গতকাল বুধবার থেকে গাছ কাটা বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের এডিএম এরাদুল হক বলেন, সড়ক ও বন বিভাগের দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি সভা করেছি। তাদের এ ব্যাপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলেছি। কাগজ পর্যালোচনা করে এ ব্যাপারে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে ফরিদপুরের সাধারণ জনগণ জানান, ফরিদপুরে সর্বস্তরে হরিলুট শুরু হয়েছে। হরিলুটের বিষয়গুলি সড়ক ও জনপথের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানান জনগণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন