বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

বিদেশে দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করুন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ

প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং পুলিশবাহিনীর সব শান্তিরক্ষীকে বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা বজায় রাখার জন্য উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছি। আপনারা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি শান্তিকামী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন, বিশ্বে বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রাখবেন। আপনারা বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করবেন এবং কর্মের মাধ্যমে দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বলতর করবেনÑএই আমাদের প্রত্যাশা।’
গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০১৬’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা নিযুক্তির জন্য নতুন কিছু প্রস্তাবনা পাওয়ার কথা জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, অতি স¤প্রতি আমরা জাতিসংঘ সদর দপ্তর এবং শান্তিরক্ষা মিশনসমূহে উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে আমাদের সামরিক অফিসারদেরকে নিযুক্তি প্রদানের জন্য আরও কিছু প্রস্তাবনা পেয়েছি। এখানে আমি উল্লেখ করতে চাই যে, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল ও বলিষ্ঠ কূটনৈতিক এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টারই ফল।
শান্তিরক্ষা মিশনে নারীদের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশবাহিনী তাদের মহিলা শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে চলেছে। জাতিসংঘ বর্তমানে মহিলা প্রতিনিধিত্বের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে। বাংলাদেশও এ বিষয়ে পিছিয়ে নেই।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে উচ্চপর্যায়ের নিযুক্তিতে আমাদের মহিলা শান্তিরক্ষীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আমাদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে। অনুষ্ঠানে ছয় শহীদ শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং ৩০ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি. ওয়াটকিনস বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কঙ্গো, মালি ও লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে কথাও বলেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সকল দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে স্মরণ করা হয় এই দিনে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের স্মরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এই দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। গতকাল বাংলাদেশেও এ দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করা হয়েছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ বাংলাদেশ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১৯৮৮ সাল থেকে অংশ নিয়ে অদ্যাবধি বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারী মনোভাব, আনুগত্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তাদের অনন্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমÐলে দেশের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ এখন বিশ্বে সর্বোচ্চ শান্তি সেনা প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশবাহিনী আন্তর্জাতিক মান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। যে কারণে বাংলাদেশ বীরের জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নারীরাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।
দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ শান্তি ও স¤প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে সকল শান্তিরক্ষী সদস্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন প্রেসিডেন্ট তাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের দৃষ্টান্তমূলক সেবা, কঠোর পরিশ্রম, আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ মনোভাব ও সাহসিকতা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে শুধু পরিচয়ই করায়নি, বরং দেশের ভাবমর্যাদাকেও অনেক উজ্জ্বল করেছে।
ইউক্রেনের শান্তিরক্ষী সংস্থা এবং ইউক্রেন সরকারের যৌথ প্রস্তাবনায় ১১ ডিসেম্বর, ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী এ দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রথম উদযাপন করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন