ধান নিয়ে দেশ যখন সরগরম ঠিক সে সময়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা খাদ্য গুদামে চলছে ঠিক উল্টো চিত্র। অভিযোগ উঠেছে গোদাগাড়ী পৌর সদরের আফজি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার সহকারী শিক্ষক শামসুজ্জোহা বাবু নিজেই প্রভাব খাটিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছেন।
অভিযোগের অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, নামধারী শিক্ষক ও সাংবাদিক আগেই খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ৪০ টন ধান বিক্রয় করেছে। আবারো প্রায় ৩০ টন ধান দেবার জন্য গুদামের ভেতরে স্তুপ করে ঢেকে রাখা হয়েছে কয়েকটি ধান বোঝায় ট্রলি। গুদামে প্রবেশ মাত্রই সেটাও চোখে পড়লো। এরই মাঝে কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা অভিযোগ করেন, ধান ক্রয় করা হবে প্রকৃত কৃষকদের কাছে থেকে এ মাইকিং শুনে গুদামের কর্মকর্তার সঙ্গে ধান দেবার কথা বলতে আসলে সাফ জানিয়ে দেয় গোদাগাড়ী পৌরসভার বরাদ্দকৃত ধান ক্রয় করা হয়ে গেছে আর কোনো সুযোগ নেই। পরবর্তীতে আসলে সে সুযোগ করে দেব।
এসব অভিযোগের বিষয়ে খাদ্য গুদামের পরিদর্শক মির্জা জাকারিয়া বলেন, খাদ্য গুদামে উপজেলায় ৪১০ মেট্রিক টন কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার সুযোগ আছে। তা কৃষকদের কাছ থেকেই কেনা হয়েছে। ধান ক্রয়ের পরিমাণের চেয়ে কৃষকের সংখ্যা অনেক বেশি তাই সব কৃষকের কাছে থেকে ধান ক্রয় করা সম্ভব না। সরকার কেনার পরিমাণ বাড়ালে বেশি করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে পারবে।
ধান ক্রয় যদি বন্ধই থাকে তাহলে খাদ্য গুদামের ভেতরে বিশাল ধানের বস্তার স্তুপ কেন রাখা হয়েছে কে রেখেছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কে বা কারা রেখেছে তা কিছুই জানেন না। শিক্ষক ও সাংবাদিক শামসুজ্জোহা বাবুকে সুবিধা পাইয়ে দিতে তাকে এসব সুবিধা দিয়েছেন বললে তিনি এসব কিছুই জানেন না বলে জানান।
সহকারী ফুড ইন্সপেক্টর মো. সোহেলের কাছ থেকে কৃষকদের বস্তা দেবার খাতা দেখতে চাইলে ২৬ মে তার নামে ২২৫ টি বস্তা, ২৭ মে তিন দফায় ৭৫টি করে ২২৫ টি বস্তা, পুনারায় ২৮ মে ২২৫, ৩০ মে দুই দফায় ২২৫ টি ও ৭ টি বস্তা দেয়ার রেকর্ড করা আছে।
এসব বিষয়ে ফুড ইন্সপেক্টর মির্জা জাকারিয়া বলেন, কৃষকদের সঙ্গে এসে কেউ এমনটি চালাকি করে নিতে পারে সেটা আমি বলতে পারবো না। কৃষক নয় বা কোন সাংবাদিককে এমন সুযোগ দেবার প্রশ্ন আসে না। এছাড়াও আমি এখানে নতুন এসেছি পরবর্তীতে আরো সুক্ষতার সঙ্গে কৃষকদের কাছে থেকে ধান ক্রয় করবো বলে জানান।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা ফুড কন্ট্রোলার বিকাশ চন্দ্র বলেন, প্রকৃত কৃষক ছাড়া একক কোনো ব্যক্তির ধান দেবার সুযোগ নেই। সাংবাদিক বাবুর নামে বস্তা বরাদ্দের বিষয়ে বলেন কারো নামে বস্তা দেবার সুযোগ নেই। তবে খাতায় তার নাম কিভাবে আসলো সে বিষয়টি তার জানা নেই।
এ বিষয়ে শামসুজ্জোহা বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অকপটেই তা স্বীকার করে বলেন, আমার একটু ভুল হয়ে গেছে একবার সংশোধনের সুযোগ দেন। খাদ্য গুদামে আমার নানাসহ বেশ কিছু লোকের কার্ড জড়ো করে গুদামে ধান দিয়ে কিছু টাকা লাভ হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন